Uttarakhand Village Curse: ৪০০ বছর পুরনো অভিশাপ থেকে বাঁচতে হোলি উদযাপন করে না এই তিনটি গ্রাম!
Holi Celebration: স্থানীয় এক পুরোহিত জানান, এই তিন গ্রামের বাসিন্দারা মূলত কাশ্মীরের কুয়েলি, খুরজান ও জৈন্ডলা থেকে উত্তরাখণ্ডে চলে এসেছিলেন। তার আগে রাজপুতদের বিস্ত গোষ্ঠী এই গ্রামগুলিতে থাকতেন। কিন্তু আচমকাই মহামারি দেখা যায় গ্রামে। কলেরা ও চিকেন পক্সে মারা যান বহু মানুষ।
দেহরাদুন: গোটা দেশ যেখানে রঙের উৎসবে মাতোয়ারা, সেখানেই রঙ থেকে শত হাত দূরে থাকেন উত্তরাখণ্ডের তিনটি গ্রাম। রুদ্রপ্রয়াগের জেলার প্রত্যন্ত তিনটি গ্রামে দীর্ঘ ৪০০ বছর ধরেই এই নিয়ম মেনে চলা হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, গ্রামের যদি কেউ হোলি উৎসব পালন করে, তবে গোটা গ্রামেই বড় কোনও বিপদ নেমে আসবে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা মহামারি নেমে আসতে পারে। সেই কারণেই প্রতি বছর এই দিনটিতে গ্রামবাসীরা কার্যত গৃহবন্দি থাকেন।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, ৪০০ বছর আগে দেবী ত্রিপুরা বালা ত্রিপুর সুন্দরী অভিশাপ দিয়ে গিয়েছিলেন। হোলি উদযাপনের অপরাধে শয়ে শয়ে মানুষ কলেরা ও চিকেন পক্সে মারা গিয়েছিলেন। গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন বাকি সকলে। পরে অবশ্য তারা ফিরে আসেন এবং দেবীর কাছে পুজো দিয়ে তাকে সন্তুষ্ট করেন। এরপর থেকেই ওই তিনটি গ্রামে হোলি খেলা নিষিদ্ধ।
স্থানীয় এক পুরোহিত জানান, এই তিন গ্রামের বাসিন্দারা মূলত কাশ্মীরের কুয়েলি, খুরজান ও জৈন্ডলা থেকে উত্তরাখণ্ডে চলে এসেছিলেন। তার আগে রাজপুতদের বিস্ত গোষ্ঠী এই গ্রামগুলিতে থাকতেন। কিন্তু আচমকাই মহামারি দেখা যায় গ্রামে। কলেরা ও চিকেন পক্সে মারা যান বহু মানুষ। সেই সময়ই গ্রামে এই প্রবাদ প্রচলিত হয় যে, ত্রিপুরা বালা ত্রিপুর সুন্দরীর অভিশাপেই মড়ক লেগেছে। ওই দেবী চিৎকার-চেঁচামেচি ও রঙ পছন্দ করতেন না। কিন্তু গ্রামবাসীরা রঙ খেলাতেই দেবী ক্ষুব্ধ হন এবং অভিশাপ দেন।
রাজপুতদের চলে যাওয়ার পর পান্ডে গোষ্ঠীও এই গ্রামে থাকতে আসেন, কিন্তু তারাও বেশিদিন টিকতে পারেননি। সর্বশেষে সাতটি পুরোহিত সম্প্রদায় এবং নেগী রাজপুতদের চারটি সম্প্রদায় কাশ্মীর থেকে আসেন এবং চামোলি জেলার কোঠা গ্রামে বসবাস করতে শুরু করেন। দেবীর অভিশাপের ওই প্রচলিত প্রবাদ শোনার পরই তারা সিদ্ধান্ত নেন আর কোনও দিন রঙের উৎসব পালন না করার।
বর্তমানে গ্রামে ৪৭টি পুরোহিত ও নেগী রাজপুত পরিবার বসবাস করেন। এই গ্রামের নিয়ম, দেবী ত্রিপুরা সুন্দরীর পুজো একমাত্র পুরোহিতরাই করতে পারেন, কিন্তু প্রসাদ তারা তৈরি করতে পারেন না। সেই কাজটি করেন নেগী রাজপুতরা। গ্রামের সীমানার বাইরে লোকজন রঙ খেলতে পারলেও, গ্রামবাসীরা কেউ রঙ খেলতে পারেন না।