নয়া দিল্লি: দ্বিতীয় ঢেউ একটু একটু করে স্তিমিত হচ্ছে। তবে তাতে আশার দেখলে চলবে না। একটু অসতর্কতার সুযোগে ঠিক যে পথে দ্বিতীয় তরঙ্গ ঢুকে পড়েছিল, সেই পথেই তৃতীয় তরঙ্গ (Third Wave) প্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এইমস (AIMS) সহ দেশ-বিদেশের একাধিক প্রতিষ্ঠান এই তৃতীয় ওয়েভ নিয়ে সতর্ক করেছিল আগেই। আর এ বার সরাসরি এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পড়ল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে (PMO)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (Home Ministry) অধীন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের (NIDM) তরফ থেকে এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, অক্টোবরেই চরম আকার ধারণ করতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। শিশুদের ক্ষেত্রে যে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকবে, সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে।
যদিও একসঙ্গে অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েন, আর জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকেও বলা হয়েছে যাতে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিকাঠামোর দিকে নজর দেওয়া হয়।
দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে ওই রিপোর্টে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শিশুরা আক্রান্ত হলে যে পরিকাঠামোর প্রয়োজন তার প্রায় কিছুই নেই দেশে। এ ছাড়া চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে। কেন্দ্রের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে যে থার্ড ওয়েভ এলেও তার মোকাবিলা করতে তৈরি তারা। এই ক্ষেত্রে ২৩,১২৩ কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘থার্ড ওয়েভের মোকাবিলা করার জন্য সম্পূর্ণভাবে তৈরি নরেন্দ্র মোদী সরকার। ২৩,১২৩ কোটি থাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এই ক্ষেত্রে। পেডিয়াট্রিক কেয়ারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কারণ তৃতীয় ঢেউতে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।
এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট চিকিৎসক ড. শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক বলেন, ‘চিন্তার মূল কারণ হল অনেক জায়গাতেই লকডাউন উঠে গিয়েছে। মানুষ স্বাভাবিক জনজীবনে ফিরছেন। যাঁরা করোনার দুটি ডোজ পেয়ে গিয়েছেন, তাঁরা মাস্ক নামিয়ে চলাফেরা করছেন, যা উচিৎ নয়।’ পাশাপাশি একটি ডোজ পেলে, তাঁরা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত নয় বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি। দেশে ভ্যাকসিনের গতিও প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। চিকিৎসক জানান, প্রতিদিন ১ কোটি মানুষকে আমাদের টিকা দিতে হবে, যা আমরা পারছি না। দেশের মাত্র ১০ কোটি মানুষের দুটি টিকা পেয়েছেন। ফলে এখনও একটা বড় অংশের মানুষ টিকাকরণ থেকে বঞ্চিত, আর সেটাই ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আরও পড়ুন: ‘মন ছুঁয়েছে ওনার প্রতিটি কথা’, নমোর সাক্ষাৎ পেতে পায়ে হেঁটেই ৮১৫ কিমি পথ পাড়ি দিচ্ছে কাশ্মীরী যুবক