নয়া দিল্লি : ত্রিপুরার হিংসার ঘটনায় সাংবাদিক শ্যাম মীরা সিং এবং দুই আইনজীবীকে সাময়িক স্বস্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট। ওই সাংবাদিক এবং দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ইউএপিএর ধারায় মামলা করেছিল ত্রিপুরা পুলিশ। সেই মামলা যাতে বাতিল করা হয়, তার আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। আজ সেই আবেদনের শুনানি ছিল। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই সাংবাদিক এবং দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে কোনওরকম বলপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না বলে বুধবার জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
গত মাসে ত্রিপুরায় যে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেই সময় বেশ কিছু প্রতিবেদন এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইনের আওতায় মামলা করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। এর মধ্যে সাংবাদিক শ্যাম মীরা সিংয়ের একটি ‘বিতর্কিত’ টুইটও রয়েছে। ত্রিপুরা পুলিশের ওই এফআইআরকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। আজ এই সংক্রান্ত মামলায় শীর্ষ আদালত ত্রিপুরা সরকারকে নোটিস পাঠিয়ে এই নির্দেশ দিয়েছে।
আবেদনকারী জানিয়েছেন, “রাজ্য এভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না। আজ আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, আগামিকাল অন্য কারও বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এই ধরনের মামলায় প্রক্রিয়াটাই একটি সাজা। আমি ঠিকভাবে খেতে পারছি না, ঘুমাতে পারছি না। ইউএপিএ আইনের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। সত্যিটাকে আড়াল করার জন্য় ইউএপিএ আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে।”
সাংবাদিক শ্যাম মীরা সিংয়ের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আনসার ইনদোরি এবং মুকেশ, তাঁরাও সুপ্রিম কোর্টে একই আবেদন জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ওই দুই আইনজীবীই হিংসা পরবর্তী সময়ে সত্যানুসন্ধানী দলের সদস্য হিসেবে ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন।
আইনজীবী মুকেশ জানিয়েছেন, ত্রিপুরার হিংসার বিষয়ে আমরা যে রিপোর্ট তৈরি করেছি তার জন্য আমার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই এফআইআরের কারণে আমরা ভীষণ উদ্বিগ্ন রয়েছি। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আপাতত স্বস্তি দিচ্ছে, কিন্তু আমরা চাই এই এফআইআর বাতিল হোক। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনা সম্পর্কে আমাদের তথ্য-অনুসন্ধানের রিপোর্ট ছিল সম্পূর্ণ বাস্তবসম্মত, আপত্তিকর কিছু ছিল না। আমরা সুপ্রিম কোর্ট থেকে ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করছি।”
সুপ্রিম কোর্টে জমা করা ওই আবেদনে এও বলা হয়েছে গোটা ঘটনার তদন্ত যেন আদালতের তত্ত্বাবধানে চলে। তাঁদের বক্তব্য, ইউএপিএর কিছু অংশ অসাংবিধানিক। এই বিষয়ে তাঁরা, যুক্তি দেন যে রাজ্য যেভাবে ইউএপিএ আইনকে ব্যবহার করে তথ্য অনুসন্ধানকারী দলকে অপরাধী প্রমাণ করার চেষ্টা করছে, তাতে বাক স্বাধীনতার উপর “হাড় হিম করা প্রভাব” পড়বে। এমনটা হলে কেবলমাত্র “সরকারের যে তথ্যগুলি চাইবে, কেবল সেগুলিই বেরিয়ে আসবে”।
আরও পড়ুন : ‘সব অফিসারকে বরখাস্ত করে দেব’, ফের সিবিআই তদন্তের হুঁশিয়ারি দিয়ে এসএসসি সচিবকে নজিরবিহীন ভর্ৎসনা হাই কোর্টের