আগরতলা: বিজেপির উদ্দেশে তীব্র কটাক্ষ ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা দলের তরফে ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী সুস্মিতা দেব (MP Sushmita Dev)। গত মাসেই ত্রিপুরা দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার সময় আক্রান্ত হয় সুস্মিতার গাড়ি। তাঁর অভিযোগ ছিল বিজেপি পরিকল্পিতভাবেই তাঁর গাড়িতে আক্রমণ চালিয়েছে। ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন তৃণমূল (TMC) সাংসদ। দলের তরফে ত্রিপুরা পুলিশের কাছে একটি ভিডিয়ো ফুটেজও জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গতকাল টুইটারে এক বিবৃতি প্রকাশ করে ত্রিপুরা পুলিশ জানিয়ে দেয়, সাংসদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় যে ৪ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল এবং যে ভিডিয়ো জমা দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে অভিযুক্তদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায়নি। এই টুইট সামনে আসার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সুস্মিতা।
টুইটারে ত্রিপুরা পুলিশের করা টুইটিকে রিটুইট করে সাংসদ লেখেন “পরের বার যখন আমার ওপর আক্রমণ হবে আমি তখন আক্রমণের আরও বড় ভিডিয়ো তুলে রাখার চেষ্টা করব এবং আক্রমণকারীদের থেকে তাদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বরও জোগাড় করে রাখার চেষ্টা করব। বিপ্লব বাবু ত্রিপুরা পুলিশের হয়ে আপনি আরেকটু বেশি বিশ্বাসযোগ্য টুইট লেখার চেষ্টা করুন।”
টুইটে ত্রিপুরা পুলিশ আরও লিখেছে, “যে ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে তাঁরা ঘটনস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। অভিযোগকারীর পক্ষ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে ওই ব্যক্তিদের মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং তদন্তের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের চাপ দেওয়া হয়েছে যা কাম্য নয়।”
তৃতীয় বারের জন্য বাংলার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সাফ জানিয়েছিলেন, ‘এবার লক্ষ্য দিল্লি’। সেইমত তৃণমূলের (TMC) আগামি দিনের প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে ত্রিপুরার নাম চূড়ান্ত করেন মমতা অভিষেকরা। ত্রিপুরায় তৃণমূলের প্রবেশের পর থেকেই লাগাতার বিজেপির সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন দলের নেতা কর্মীরা। বারবা তৃণমূল নেতা কর্মীদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে, এমনকি আক্রমণের পর পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব হয়েছিল তৃণমূল।
সম্প্রতি, পুরসভা নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রায়ে মুখ পুড়েছে বিপ্লব দেব (Biplab Deb) প্রশাসনের। বিরোধী দলের সব প্রার্থীকেই নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এমনকি মুখ্যসচিব ও ডিজিপিকেও এই মর্মে হলফলনামা জমা দিতে বলে আদালত। সেই মামলাটি করেছিলেন সুস্মিতা স্বয়ং। মনে করা হচ্ছে সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের পর কিছুটা ব্যাকফুটে রয়েছে ত্রিপুরা বিজেপি। তার কয়েকদিন পরেই ত্রিপুরা পুলিশ ও সুস্মিতা দেবের সংঘাতে রাজনীতির পারদ আরও চড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন ধরা পড়েনি কেউই, উলটে জুটছে খুনের হুমকি! ক্ষোভ উগরাতে সিবিআই দফতরে নিহত বিজেপি কর্মী অভিজিতের দাদা