নয়া দিল্লি : সম্প্রতি লখিমপুর খেরি ঘটনায় জামিন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশীষ মিশ্র টেনি। এইবার আশীষ মিশ্রের জামিন বাতিলের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন জমা দিলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী সি এস পণ্ডা এবং শিবকুমার ত্রিপাঠী সুপ্রিম কোর্টে আশীষ মিশ্রের জামিন খারিজ করা নিয়ে আবেদন জানান। এর পাশাপাশি লখিমপুর খেরি ঘটনায় তদন্তের জন্য গঠিত SIT এর সময়মতো রিপোর্ট দাখিল না করার অভিযোগ করেছেন। তাঁরা এই পিটিশনে প্রসিকিউশনের জন্য যথাযথ তদন্ত করার দাবিও জানিয়েছে।
আশীষের জামিনের বাতিল করে আবেদনকারীরা বলেছেন, “অভিযুক্তরা বাইরে ঘোরাফেরা করছে। ফলে সাক্ষী ও প্রমাণ লোপাট, কৃষক এবং হামলার শিকার হওয়া পরিবারের প্রতি হুমকির সম্ভাবনা রয়েছে।” সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী সর্বোচ্চ আদালতের কাছে SIT কে তৎক্ষণাৎ স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। আবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে যে শীর্ষ আদালতও ভুক্তভোগীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য উত্তর প্রদেশ সরকার এবং কেন্দ্রকে নির্দেশ দিক। ১০ ফেব্রুয়ারি উত্তর প্রদেশে প্রথম দফার নির্বাচনের দিন জামিন পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশীষ মিশ্র টেনি। এলাহাবাদ কোর্টের তরফে এই জামিন মঞ্জুর করা হয়েছিল। সেই জামিনের শর্ত হিসেবে তাঁর আইনজীবীরা ৩ লক্ষ টাকার দুটি জামিন বন্ড জমা করেছিলেন। অবশেষে মঙ্গলবার তিনি জেল থেকে ছাড়া পেলেন। আশীষ মিশ্র টেনির জামিন পাওয়ার ঠিক আগের দিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন লখিমপুর খেরি কাণ্ডে মন্ত্রী পুত্রের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৩ অক্টোবর উত্তর প্রদেশের লখিমপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্র ও রাজ্যের উপ-মুখ্য়মন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য্য। সেইসময় তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে জায়গায় জায়গায় কৃষক বিক্ষোভ হচ্ছিল। লখিমপুর খেরিতে বেশ কিছু কৃষক পথ আটকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। কৃষকরা যখন ফিরে যাচ্ছিলেন, সেই সময়ই একটি কালো এসইউভি গাড়ি পিছন থেকে দ্রুতগতিতে এসে কৃষকদের ধাক্কা মারে। গাড়ির ধাক্কায় ৪ জন কৃষক সহ ৮ জনের মৃত্যু হয়। এরপরই গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগ উঠেছিল, ওই কালো এসইউভি গাড়িতে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রের ছেলে আশীষ মিশ্র। যদি তাঁরা দুজনেই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। এদিকে, গাড়ি চাপা পড়ে কৃষক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা দেশ উত্তাল হয়। রাজনৈতিক মহলের তরফেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ইস্তফার দাবি জানানো হয়। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। তারপর ৯ অক্টোবর তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় আশীষ মিশ্রকে।