নয়া দিল্লি: আদমসুমারিতে (E-Census) এক নতুন যুগে প্রবেশ করতে চলছে ভারত। প্রথমবার ডিজিটাল জনগণনার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দেশ। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রকে আরও উন্নত করে তুলেছে। যার উপর নির্ভর করে জনসংখ্যা, শ্রেণি, লিঙ্গ, বয়স, চাকরি ও আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে দেশের ১৩০ কোটি জনগণের হিসেব রাখা হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই (Nityananda Rai) মঙ্গলবার সংসদে জানিয়েছেন, দেশের পরবর্তী আদমসুমারি সম্পূর্ণ অ্যাপ নির্ভর হবে। তিনি আরও জানান, আগামী জনগণনা হবে দেশের প্রথম ডিজিটাল জনগণনা। সেখানে সেল্ফ-ইনিউমারেশনের জায়গাও থাকবে।
সারা দেশে কত মানুষ রয়েছেন, তাঁদের জাতি, ধর্ম, পেশা কী? জনগণনার মাধ্যমে এই সব তথ্য প্রতি দশ বছর অন্তর সংগ্রহ করা হয়। তারপর প্রকাশিত হয় দেশের জনসংখ্যা। সারা দেশ জুড়ে লক্ষ লক্ষ কর্মী প্রতি দশ বছর অন্তর আমার আপনার বাড়ি গিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করেন, কাগজে টিক দেন। এভাবেই হয়ে আসছে জনগণনা। তবে এবার বদলে যাবে দেড়শো বছরের রীতি। এবার সেনসাসও ডিজিটালি হতে চলেছে। জনগণনা হল এক বিরাট কর্মযজ্ঞ। এর গুরুত্বও অপরিসীম। কারণ এই জনগণনার ওপরেই নির্ধারিত হয় বাজেটের বরাদ্দ থেকে উন্নয়নের প্রকল্প।
দেশের শেষ জনগণনা হয়েছে ২০১১ সালে। তারপর আর জনগণনা হয়নি। তবে এবার নতুন জনগণনায় বদল আসতে চলেছে। বাড়ি এসে সেনসাস বা জনগণনার কাজ করা কর্মীরা আপনার নাম, ঠিকানা, বয়স, লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম, পেশা, পরিবার সহ যাবতীয় তথ্য আর খাতায় কলমে জেনে নেবেন না। সবই হবে, তবে সেটা ডিজিটালি। জনগণনায় প্রত্যেক ভারতীয়র অন্তর্ভুক্তি দরকার। এটা কত বড় কর্মযজ্ঞ একটা সাম্প্রতিক তথ্য জানলেই বোঝা যাবে।
২০২১ সালের জনগণনা করতে ২০১৯ সাল থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বরাদ্দ করা হয়েছিল ৮,৭৫৪.২৩ কোটি টাকাও। ৩৩ লক্ষ জনগণনাকারীকে নামিয়ে আদমসুমারির কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা হয়। কিন্তু ২০২০ ও ২০২১ সালে কোভিডের কারণে জনগণনার কাজ শুরু করা যায়নি। ২০২২ সালে ফের জনগণনার কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। অবশেষে সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছেন দেশের প্রথম ডিজিটাল সেনসাস হবে এবার। এই জনগণনা পদ্ধতিতে দেশের নাগরিকদের মোবাইল ফোন ও ডিজিটাল পরিচয় পত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
কেমন হবে বিষয়টা? সূত্রের দাবি, এরজন্য একটি মোবাইল অ্যাপও আনার প্রক্রিয়া চলছে। সেই মোবাইল অ্যাপে দেশের সব নাগরিকের আধারের মতো ডিজিটাল পরিচয় পত্রের লিঙ্ক থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়। জানা যাচ্ছে, আম আদমিরও ভূমিকা থাকছে এবারের জনগণনায়। সেখানে বেশ কিছু সহজ ও নিজে থেকে আপলোড করার মতো ব্যবস্থাও থাকবে। পরের বছরের অর্থাৎ ২০২৪ সালের লোকসভার পরেই হতে চলেছে এবারের সেনসাস। সূত্র মারফত তেমনই জানা যাচ্ছে।