জোশীমঠ: উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের পর পাঁচদিন কেটে গিয়েছে, এখনও চলছে উদ্ধারকার্য। এতদিন আটকে থাকার পর সুড়ঙ্গে প্রাণের আশা খুবই ক্ষীণ বলেই মনে করছেন উদ্ধারকারী দলগুলি, তবুও পিছু হটতে নারাজ তাঁরা। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও নিখোঁজ ১৭০ জন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া জোশীমঠের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩৪টি মৃতদেহ।
রবিবার থেকেই তপোবন বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিভিন্ন সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার কার্যে লেগে পড়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী ও আইটিবিপি। একইসঙ্গে হাত লাগিয়েছিল এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ। প্রথম সুড়ঙ্গ থেকে ১২ জন শ্রমিককেই জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হলেও পাঁচদিন পরও দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ সম্পূর্ণ পরিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে এখনও অবধি মাত্র দেড় কিলোমিটার পরিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। গতকালই উদ্ধারকারী দলগুলির তরফে বলা হয়, “সুড়ঙ্গ থেকে লাগাতার জল ও কাদা বের হওয়ায় উদ্ধারকার্যে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। অন্য পদ্ধতিতে উদ্ধারকার্য চালানো সম্ভব কিনা, তা ভেবে দেখা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: প্রয়াগে ডুব লাগাবেন প্রিয়ঙ্কা, ‘নাটক’ আখ্যা হিন্দু মহাসভার
আজ সকালে জানা যায়, সুড়ঙ্গের ভিতরে প্রবেশ করে জমে থাকা কাদামাটি পরিষ্কার করতে অত্যাধিক সময় লাগায় বর্তমানে ড্রিল মেশিনেরর সাহায্যে সুড়ঙ্গের পাশে ফুটো করা শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে আইটিবিপির মুখপাত্র বিবেক কুমার পাণ্ডে বলেন, “গতকাল রাত ২টো নাগাদ উদ্ধারকারী দলগুলি ড্রিলিং শুরু করেছে। সরাসরি সুড়ঙ্গের ভিতরে প্রবেশ না করে উপর থেকে সুড়ঙ্গ কাটার চেষ্টা করছে দলগুলি। এতে একদিকে যেমন পরিশ্রম কমবে, তেমনই দ্রুত উদ্ধারকার্যও চালানো সম্ভব হবে।”
Rescue teams have started drilling operation to peep into the tunnel. We are presently at 6.5 meters: Uttarakhand DGP Ashok Kumar pic.twitter.com/sGn7Y2Wtzz
— ANI (@ANI) February 11, 2021
বিপর্যয়ের পর পাঁচদিন কেটে যাওয়ায় সুড়ঙ্গে ভিতরে আটকে থাকা ২৫ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক আদৌই বেঁচে রয়েছেন কিনা, সেই বিষয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিজনদের সান্তনা দিয়ে আইটিবিপির ডিরেক্টর জেনারেল এস এশ দেশওয়াল বলেন, “আমাদের জওয়ানরা যথাসাধ্য প্রচেষ্টা করছে। যাঁরা সুড়ঙ্গের ভিতরে বিগত পাঁচদিন ধরে খাবার ও জল ছাড়াই আটকে রয়েছেন, তাঁদের অবস্থা আমরা কল্পনা করতে পারছি। তবে সুড়ঙ্গের ভিতরে অক্সিজেনের উপস্থিতি ও তাপমাত্রা ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি হওয়ায় আশা করা হচ্ছে তাঁরা সুরক্ষিতই রয়েছেন।”
এদিকে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজ না পাওয়ায় ধীরে ধীরে ধৈর্য হারাচ্ছেন পরিজনেরা। নিখোঁজ এক শ্রমিকের ভাই বলেন, “সম্পূর্ণ উদ্ধারকার্যই একটি খেলায় পরিণত হয়েছে। আমরা ১৮ দশকে বসবাস করছি না যে উদ্ধারকার্য চালানোর জন্য একটিই বুলডোজার ব্যবহার করতে হবে! অত্যাধুনিক প্রযুক্তি বা মেশিনগুলি কোথায়?”
অন্যদিকে, চামোলিতে যে গ্রামগুলি রবিবারের হড়পা বানে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, সেখানে যোগাযোগ স্থাপনে অস্থায়ী ঝুলন্ত সেতু তৈরি করছে আইটিবিপির জওয়ানরা। উদ্ধারকার্যে নজরদারি করতে আজ চামোলিতে যান উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল বেবী রাণী ময়ুরা। তিনি সেখানে সেনাবাহিনী ও আইটিবিপির জওয়ানদের সঙ্গেও কথা বলেন।
Uttarakhand: ITBP troops help in constructing Jhula bridge across disconnected villages in Chamoli. This will be used to transport ration from one side of the bridge to another side. pic.twitter.com/SlQrgy3We3
— ANI (@ANI) February 11, 2021
আরও পড়ুন: সীমান্তে সেনা প্রত্যাহারে দুই দেশকেই মানতে হবে তিনটি শর্ত, জানালেন রাজনাথ