দেরাদুন: কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী এক স্নাতকোত্তর প্রশিক্ষণার্থী মহিলা ডাক্তারের নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তাল গোটা দেশ। দেশ ছাড়িয়ে এই ঘটনার অভিঘাত পৌঁছেছে বিদেশেও। কলকাতার ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাত দখল আন্দোলনে যোগ দিয়েছে হাওড়া থেকে হেলসিঙ্কি। এরই মধ্যে, এক ৩৩ বছর বয়সী নার্সকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ উঠল উত্তরাখণ্ডে। ৩০ জুলাই থেকেই নিখোঁজ ছিলেন ওই নার্স। ঘটনাটি ঘটেছে উধম সিং নগর জেলার রুদ্রপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, এক বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন নিহত মহিলা। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে, তাঁর সঙ্গে এই জঘন্য ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহ ইতিমধ্য়েই সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে উত্তরাখণ্ড পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতা গদরপুরের ইসলামনগরের বাসিন্দা। উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের এক বেসরকারি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করতেন তিনি। বিলাসপুর কলোনিতে তাঁর বাড়ি। তাঁর এক ১১ বছরের মেয়েও আছে। ওই মেয়ের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। ৩০ জুলাই প্রতিদিনের মতো হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আর বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন, অর্থাৎ, ৩১ জুলাই তাঁর বোন একটি নিখোঁজ ব্যক্তির রিপোর্ট দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এর এক সপ্তাহ পর, উত্তর প্রদেশের দিব্দিবার এক ফাঁকা জমি থেকে ওই নার্সের দেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর, দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, তাঁকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।
এরপর, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ধর্মেন্দ্র নামে উত্তর প্রদেশের বেরেলির এক শ্রমিককে, রাজস্থানের যোধপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ৩০ জুলাই রাতে, হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে কোনোভাবে প্রলুব্ধ করে ওই নার্সকে এক নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল সে। তারপর এক ঝোপের মধ্যে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে ধর্মেন্দ্র। তারপর, তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং সবশেষে তার গয়না চুরি করে পালিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করেই তারা সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই নার্স রুদ্রপুরের ইন্দ্রচক থেকে একটি টেম্পো ধরেছিলেন। সেখান থেকে তার সর্বশেষ গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ। সেখানেই ধর্মেন্দ্রকে দেখা যায়।
মৃতা নার্সের মোবাইল ফোনটিও চুরি গিয়েছিল। এরপর তারা ওই চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনের অবস্থান ধরে খোঁজ শুরু করে। যা তাদের নিয়ে গিয়েছিল রাজস্থানের যোধপুরে। সেখান থেকেই ধর্মেন্দ্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাকে দেরা করা হয়। জেরার মুখে অপরাধ স্বীকারও করে নিয়েছে সে। তার বয়ান অনুযায়ী, ছিনতাই করার উদ্দেশে সে ওই নার্সে উপর হামলা চালিয়েছিল। তারপর তাঁকে একটি খালি প্লটে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করেছিল। এরপর, তাঁর সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা, গয়না, মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)