Uttarakhand Tunnel Rescue: চতুর্থবার সুড়ঙ্গে বন্দি, দমচাপা অন্ধকারে ১৭ দিন বাকি ৪০ জনকে সতেজ রাখলেন গব্বর
Uttarakhand Tunnel Rescue: উত্তরাখণ্ডেরই বাসিন্দা তিনি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূরে পাউরি গাড়ওয়াল জেলার এক গ্রামে তাঁর বাড়ি। অবিশ্বাস্য মনে হলেও, ধসের কারণে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া এই নির্মাণ কর্মীর জীবনে কোনও নতুন ঘটনা নয়। সিল্কিয়ারা-বারাকোট সুড়ঙ্গে আটকে পড়ার আগে, আরও তিন-তিনবার ধসে পড়া সুড়ঙ্গে আটকে যাওয়ার দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর।

দেরাদুন: “আমি সবথেকে সিনিয়র…আমিই সবার শেষে বের হব।” বিনা দ্বিধায় ভাইকে জানিয়ে দিয়েছিলেন গব্বর সিং নেগি। উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারায় ধসে পড়া সুড়ঙ্গে সতেরো দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ শ্রমিকের অন্যতম। ১৭ দিন বা ৪০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে, মাটি থেকে ২০০ ফুট নীচে আটকে ছিলেন তাঁরা। এই ১৭ দিনের মধ্যে, বারবার তাঁদের উদ্ধারের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। আর প্রতিবারই মাঝপথে তৈরি হয়েছে বিপত্তি। থমকে গিয়েছে উদ্ধার অভিযান। অবশেষে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, সুড়ঙ্গের কালকুঠুরি থেকে নিরাপদে মুক্ত করা গিয়েছে ৪১ জন কর্মীকেই। তাঁরা বাইরে আসার পর, সকলেই চমকে গিয়েছেন। ১৭ দিন ধরে সেখানে আটকে থাকার পরও, কীভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে এতটা সতেজ রয়েছেন ওই শ্রমিকরা? আসলে, ৪০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই ধৈর্য ও অপেক্ষার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য তাঁদের প্রয়োজন ছিল এক শক্তিশালী নেতার। আর বিপর্যয়ের মুখে সেই নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন গব্বর!
উত্তরাখণ্ডেরই বাসিন্দা তিনি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূরে পাউরি গাড়ওয়াল জেলার এক গ্রামে তাঁর বাড়ি। অবিশ্বাস্য মনে হলেও, ধসের কারণে সুড়ঙ্গে আটকে পড়া এই নির্মাণ কর্মীর জীবনে কোনও নতুন ঘটনা নয়। সিল্কিয়ারা-বারাকোট সুড়ঙ্গে আটকে পড়ার আগে, আরও তিন-তিনবার ধসে পড়া সুড়ঙ্গে আটকে যাওয়ার দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। তাই দীপাবলির ভোরে সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে যাওয়ার পরও, এতটুকু ঘাবড়াননি তিনি। নিজে যেমন বিপর্যয়ের মুখে শান্ত ছিলেন, বাকি ৪০ জন শ্রমিকও যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়েন, মনের জোর না হারান, তার খেয়াল রেখেছিলেন গব্বর সিং। বদ্ধ সুড়ঙ্গের অন্ধকারে সহকর্মীদের তিনি যোগব্যায়াম এবং ধ্যান করা শিখিয়েছেন। বারবার আশ্বস্ত করেছেন, তাঁদের একসময় উদ্ধার করা হবেই।
Tales of Heroism from the Tunnel!
Despite being trapped 200 feet under for more than 400 unnerving hours, when the opportunity for rescue came, Gabbar Singh Negi Ji, a native of Pauri Garhwal put his team before himself & made it clear that since he was senior, he would be the… pic.twitter.com/9oDibmJfOp
— Hardeep Singh Puri (@HardeepSPuri) November 29, 2023
আটকে পড়া শ্রমিকরা যাতে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সক্রিয় থাকেন, তার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডের এই নির্মাণকর্মী। এর জন্য, তাঁদের সুড়ঙ্গ-কারাগারের মধ্যেই বিভিন্ন রকমের খেলা, শারীরিক কসরতের অনুশীলন চালু করেছিলেন গব্বর সিং নেগি। বুধবার সকালে, তাঁর ভাই জয়মাল নেগি জানিয়েছেন, দাদার সঙ্গে প্রতিদিন তাঁর কথা হত। তিনি দাদাকে যোগব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। দাদা জানিয়েছিলেন, তাঁরা সকলে মিলে সেটাই করছেন। উদ্ধার হওয়া কর্মীরা জানিয়েছেন, গব্বর সিং নেগির পরামর্শেই তাঁরা সুড়ঙ্গের মধ্যে লুডু এবং দাবা খেলা শুরু করেছিলেন। এমনকি, আটকে পড়া শ্রমিকরা ‘চোর পুলিশ’-ও খেলেছিলেন বলে জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজের সঙ্গে যুক্ত এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। গব্বর সিং নেগির সাহসিকতা এবং তাঁর নেতৃত্বদানের প্রশংসা করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
