Vande Bharat: ১২০ তলা বাড়ির সমান উচ্চতা থেকে বন্দে ভারতে বসেই দেখতে পাবেন পীরপঞ্জল রেঞ্জ, ভূস্বর্গে পৌঁছনোর ভাড়া কত জানেন
Vande Bharat: এ যেন ট্রেনে বসে আকাশ ছোঁয়া। শুধু কি দ্রুতগতিতেত পাহাড়ের বুকে ছুটে যাওয়া! অত উঁচু থেকে পীরপঞ্জল পর্বতমালার অপরূপ সৌন্দর্য দেখার সুযোগ কিছু কম নয়।
নয়া দিল্লি: কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে বসে বাঙালিরাও যেন কু ঝিকঝিক শব্দ শুনতে পাচ্ছে উপত্যকা থেকে। বর্তমানে কলকাতা থেকে তিনটি ট্রেন যায় জম্মুতে। হামসফর এক্সপ্রেসে যেতে সময় আগে ৩৪ ঘণ্টার আশপাশে। হিমগিরি এক্সপ্রেসে ৩৭ ঘণ্টার একটু বেশি, আর জম্মু তাওয়াইয়ে সময় লাগে ৪৫ ঘণ্টা।
দীর্ঘ ট্রেন যাত্রার পর এতদিন কী হত জম্মু থেকে লম্বা জ্যাম সামলে শ্রীনগর যেতে হত এতদিন পর্যন্ত। এবার আর সেই সব ঝামেলা নেই। বন্দে ভারতে চেপে ঘণ্টা তিনেকে বাঙালি পৌঁছে যাবে তার প্রিয় গন্তব্য ভূস্বর্গে। কীভাবে পৌঁছবেন, কত খরচ পড়বে? কোচগুলিই বা কেমন? কবে থেকে চলতে পারে ট্রেন? জেনে নিন সব তথ্য।
এ যেন ট্রেনে বসে আকাশ ছোঁয়া। শুধু কি দ্রুতগতিতেত পাহাড়ের বুকে ছুটে যাওয়া! অত উঁচু থেকে পীরপঞ্জল পর্বতমালার অপরূপ সৌন্দর্য দেখার সুযোগ কিছু কম নয়। আক্ষরিক অর্থেই তো গগনচুম্বী সেতু ‘চেনাব।’ সেই চেনাব সেতুর পাটাতনের উচ্চতা ৩৫৯ মিটার, যা প্রায় ১২০ তলা বাড়ির সমান। পৃথিবীর উচ্চতম রেলব্রিজের থেকে আইফেল টাওয়ার ৩৫ মিটার ছোট, আর দেশের সবথেকে উঁচু বহুতল প্যালেস রয়্যালের থেকে ৩৯ মিটার খাটো। এই আকাশছোঁয়া রেলব্রিজের কাছে কুতুব মিনার তো বামন!
উচ্চতায় অনেককেই পিছনে ফেলে দিয়েছে কাশ্মীর উপত্যকার গিরিখাতের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এই স্তম্ভ। সেই স্তম্ভের উপর দিয়ে কাটরা থেকে শ্রীনগরগামী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মহড়া শেষ। এখন সবারই প্রশ্ন কবে এই রুটে চলবে ট্রেন?
১৯০ কিলোমিটার যাত্রাপথে মাতা বৈষ্ণোদেবী, কাটরা, রিয়াসি, সাঙ্গালদান, বানিহাল, কাজিগুন্দ, অবন্তীপোরা হয়ে ট্রেন শ্রীনগর পৌঁছাবে। রোজ সকাল ৮টা ১০ মিনিটে কাটরা থেকে ওই ট্রেন ছেড়ে সকাল ১১টা ২০ মিনিটে পৌঁছবে শ্রীনগর। ফিরতি পথে বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি শ্রীনগর থেকে ছেড়ে বিকেল ৩টে ৫৫য় ঢুকবে কাটরায়। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মোট সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা ১০ মিনিট।
ভাড়া
এসি চেয়ার কারের ভাড়া হতে পারে ১,৫০০ থেকে ১,৬০০ টাকা। আর এক্সিকিউটিভ চেয়ার কারের টিকিট হতে পারে ২,২০০-২,৫০০ টাকা। এই রুটে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ১৬০ কিমি/ঘণ্টা। গড় গতি ধরা হয়েছে ১৩০ কিমি/ঘণ্টা। ১৬ বগির এসি কোচে ১,১২৮ জন যাত্রী যেতে পারবেন।
শুধু বন্দে ভারত নয়, কাটরা থেকে আরও দুটি এক্সপ্রেস চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রেল। সব মিলিয়ে ৫টি ট্রেনকে কাশ্মীরের আবহাওয়ায় চালানোর উপযোগী করে তৈরি করেছে। এর মধ্যে ভিস্তাডোম ট্রেনও রয়েছে।
শীতে হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা! নাগাড়ে তুষারপাত। সব মিলিয় চরম প্রতিকূল পরিবেশ। এর জন্য ট্রেন চলাচলে যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে রেল। এই রুটে ট্রেন চালাতে চেন্নাইয়ের পেরাম্বুরে ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে যে পদ্ধতি বগি বানানো হয়েছে তা বেনজির।
কী কী ব্যবস্থা আছে এই ট্রেনে
ট্রেনে জলের পাইপ, ট্যাঙ্ক, বায়ো টয়লেটে আছে। যাতে জল না জমে, তার জন্য নেওয়া হয়েছে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা। লোকো পাইলটের কামরার সামনের কাচে যাতে বরফ বা ভিতরের দিকে জলীয় বাষ্প যাতে না জমে, তার জন্য বিশেষ প্রযুক্তি রাখা হয়েছে। অতিরিক্ত ঠান্ডায় ট্রেনের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র যাতে ঠিকমতো কাজ করে তা নিশ্চিত করতে ওই সব যন্ত্রের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রবল তুষারপাত বা ২০০ কিলোমিটার গতিরও বেশি ঝড় হলেও থামবে না ট্রেন! অনেক চ্যালেঞ্জ পার করে কাশ্মীরের পথে বন্দে ভারত। ঝড়ের গতিতে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে অনায়াসে।