নয়াদিল্লি: দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্র ছিলেন তিনি। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার গভর্নরের দায়িত্ব থেকে শুরু করে দেশের অর্থমন্ত্রীর পদ, কর্মজীবনের সবই সামলেছেন তিনি। তাই প্রধানমন্ত্রী পদে আসার পর তিনি যে দেশকে অর্থনীতির দিশা দেখাবেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না। হলও তাই। ২০০৪ থেকে ২০১৪, একের পর এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মনমোহন সিং। বৃহস্পতিবার এইমস হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মনমোহন সিং। আর এদিন পিছন ফিরে তাকাতে গেলে তাঁর সেই সব সিদ্ধান্তের কথাই সবার আগেই মনে আসছে।
১০০ দিনের কাজ
অর্থনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা যদি বলা হয়, তাহলে তা ছিল ‘মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট’ (MGNREGA)। দেশের শ্রমিকদের যেন বাইরে গিয়ে কাজ না করতে হয়, তার জন্য এই আইন ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এই আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের ১০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে দেশ যখন রিসেশনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন গ্রামীন অর্থনীতির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিল এই আইন।
রাইট টু ইনফরমেশন
রাইট টু ইনফরমেশন বা তথ্য জানার অধিকার আইন পাস হয় মনমোহন সিং এর আমলে। শুধুমাত্র অর্থনীতি নয় সরকারের স্বচ্ছতার জন্য এই আইন আজও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এই আইন জরুরি ছিল।
গরিবের মুখে অন্ন তুলে দেওয়া
দেশের সমস্ত মানুষ যাতে খাবার পায়, তা নিশ্চিত করেছিলেন মনমোহন সিং। চালু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা। দরিদ্র মানুষকে ভর্তুকি দিয়ে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করেন মনমোহন সিং। সেই আইন আজও রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এই আইনের জন্যই দরিদ্র মানুষের খাদ্যের অভাব হয়নি।
ভারত-আমেরিকা পরমাণু চুক্তি
মনমোহন সিংয়ের মেয়াদকালে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইউরেনিয়াম আমদানির অনুমতিও পেয়েছিল ভারত। এন এস জি থেকে পেয়েছিল ছাড়পত্রও।
আধার কার্ড
আধার কার্ড বর্তমানে প্রায় সবরকম কাজেই লাগে। যে কোনও পরিষেবা পেতে জরুরি এই পরিচয়পত্র। আধার কার্ড তৈরি হয়েছিল মনমোহন সিং এর আমলেই।
শুধুমাত্র দেশের অর্থনীতি নয়, দেশের সার্বিক ক্ষেত্রেই অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন মনমোহন সিং। তাঁর সেই সব সিদ্ধান্তের সুবিধা আজও ভোগ করছে ভারত।