Amritpal Singh: ‘সোনার চামচ’ মুখে নিয়ে বড় হওয়া জঙ্গিনেতা অমৃতপালের উত্থান সিনেমার মতোই
Khalistani Organization: শিখ জঙ্গি তথা খালিস্তানি নেতা জারনেল সিং ভিন্দ্রাওয়ালের সমর্থক বলেই নিজেকে দাবি করেন অমৃতপাল। তবে তিনি কিন্তু কোনওদিনই জারনেলকে দেখেননি। অমৃতপালের জন্মের ৯ বছর আগে পঞ্জাবের স্বর্ণ মন্দিরে একটি সেনা অভিযানে নিকেশ করা হয় জারনেলকে।
নয়া দিল্লি: খালিস্তানের দাবি আজকের নয়। দীর্ঘদিন ধরেই আলাদা দেশ খালিস্তানের দাবি জানাচ্ছেন শিখ সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ। আর সেই খালিস্তানি আন্দোলনেরই অন্যতম মুখ অমৃতপাল সিং (Amritpal Singh)। কয়েক মাস আগে অবধিও তাঁর নাম কেউ না জানলেও, রাতারাতি হঠাৎ খবরের শিরোনামে উঠে আসেন অমৃতপাল। তবে এই অমৃতপালের সঙ্গে কিন্তু কয়েক বছর আগেও খালিস্তানি আন্দোলনের (Khalistani Protest) দূর-দূরান্তেও যোগ ছিল না! তাহলে কীভাবে হঠাৎ খালিস্তানি নেতা হয়ে উঠলেন বছর তিরিশের অমৃতপাল? দেশের সীমান্ত পার করেও তাঁর প্রভাব বিস্তার হল কীভাবে?
কে অমৃতপাল?
পঞ্জাবের অমৃতসরের (Amritsar) জাল্লুপুর খেরা গ্রামে জন্ম। দুবাইয়ে (Dubai) রয়েছে পারিবারিক পরিবহণ ব্যবসা। আর্থিক অনটন কী, তা কোনওদিন জানেননি অমৃতপাল। পড়াশোনা শেষ করার পর ২০১২ সালে দুবাই চলে যান অমৃতপাল সিং। সেখানেই ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন তিনি। দেশে ফেরেন ২০২০ সালে। ভারতে কিছুদিন সময় কাটানোর পর ফের দুবাইয়ে ফিরে যান অমৃতপাল। মাঝের ওই সময়টাতেই বদলে গিয়েছিল অনেক কিছু। সূত্রের দাবি, অমৃতপালের দুবাই যোগকে কাজে লাগিয়েই দেশে খালিস্তানপন্থী প্রচার চালানোর পরিকল্পনা করেছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। পঞ্জাবে ফের একবার খালিস্তানি আন্দোলন শুরু করার জন্য জর্জিয়ায় আইএসআই-র কাছ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণও নিয়ে এসেছিলেন অমৃতপাল, এমনটাই দাবি।
‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ কী?
অমৃতপাল সিং খালিস্তানি সংগঠন ওয়ারিস পঞ্জাব দে-র প্রধান হিসাবেই পরিচিত। কিন্তু এই সংগঠন তিনি তৈরি করেননি। পঞ্জাবী অভিনেতা তথা অ্যাক্টিভিস্ট দীপ সিধু এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি এই সংগঠন তৈরি করেন, কিন্তু গত বছর একটি পথ দুর্ঘটনায় দীপ সিধুর মৃত্যু হওয়ার পর অমৃতপাল সিং নিজেকে ওই সংগঠনের প্রধান হিসাবে দাবি করেন।
ভিন্দ্রাওয়ালের সমর্থক-
শিখ জঙ্গি তথা খালিস্তানি নেতা জারনেল সিং ভিন্দ্রাওয়ালের সমর্থক বলেই নিজেকে দাবি করেন অমৃতপাল। তবে তিনি কিন্তু কোনওদিনই জারনেলকে দেখেননি। অমৃতপালের জন্মের ৯ বছর আগে পঞ্জাবের স্বর্ণ মন্দিরে একটি সেনা অভিযানে নিকেশ করা হয় জারনেলকে। তবে হাঁটাচলার ধরন থেকে কথা বলার ভঙ্গি, সবকিছুতেই অমৃতপাল ভিন্দ্রাওয়ালের অনুকরণ করেন। ভিন্দ্রাওয়ালের মতোই অমৃতপালও সবসময় নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ঘুরতেন। ভিন্দ্রাওয়ালে ধার্মিক নেতা হলেও, অমৃতপালের কোনও বিশেষ ধর্মীয় যোগ ছিল না।
শিরোনামে উঠে আসা-
২০২২ সাল থেকে খালিস্তানি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, সম্প্রতিই তিনি খবরের শিরোনামে উঠে আসেন। গত ফেব্রুয়ারিতে অমৃতপালের অন্যতম সহকারী, অপহরণ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত লভপ্রীত সিংকে থানা থেকে ছাড়ানোর দাবিতে বিশাল সংখ্য়ক সমর্থক নিয়ে, হাতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে থানায় চড়াও হন অমৃতপাল। এরপরে একটি ভিডিয়ো বার্তায় খালিস্তান গঠনের জন্য় গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকেই আসল লক্ষ্য় বলে ঘোষণা করেন।
অমৃতপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ-
সম্প্রতিই পঞ্জাবের গুরুদ্বার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের পর অমৃতপাল সিংয়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রিহ্যাবগুলি মাদকাসক্ত যুবকদের মগজধোলাই করতেন খালিস্তানি আন্দোলনে যোগ এবং মানববোমা হিসাবে কাজ করার জন্য। তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের যোগ রয়েছে বলেও দাবি।