কলকাতা : ভারতীয় সেনার গোর্খা রেজিমেন্টে কেন গোর্খা ছাড়া অন্যান্যদের নিয়োগ করা হবে, এই প্রশ্ন তুলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-কে চিঠি লিখলেন রাজ্যসভার সংসদ শান্তা ছেত্রী। গোর্খা রাইফেলসের ২০০ বছরের ইতিহাসের কথা উল্লেখ করে তিনি চিঠিতে লিখেছেন, গোর্খাদের মধ্যে অন্তত ২ কোটি যুবক বেকার হয়ে রয়েছেন। তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, কেন তাঁদের বাদ দিয়ে অন্যান্যদের নিয়োগ করা হচ্ছে গোর্খা রাইফেলসে?, সূত্রের খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে উত্তরাখণ্ডের গাড়ওয়াল ও কুমায়ুন এলাকার যুবকদের গোর্খা রাইফেলসে নিয়োগ করা যায়। সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর তার ভিত্তিতেই এই চিঠি লিখেছেন শান্তা ছেত্রী।
জানা গিয়েছে, গোর্খা রাইফেলসে পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া যখন শুরু হবে তখন উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল ও কুমায়ুন এলাকার বাসিন্দাদের সুযোগ দেওয়া হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সাংসদ। এতদিন পর্যন্ত ভারত ও নেপালের বাসিন্দা গোর্খাদেরই এই রেজিমেন্টে কাজের সুযোগ মিলত। কিন্তু এবার কেন্দ্রের প্রস্তাবে শিলমোহর পড়লে গাড়োওয়ালি ও কুমায়ুনিদের এই রেজিমেন্টে সুযোগ দেওয়া হবে। শান্তা ছেত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ব্রিটিশ আমলে ১৮১৫ সালে ভারত, নেপাল ও ইউকের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েই গোর্খা রেজিমেন্ট তৈরি হয়েছিল। এই রেজিমেন্টের ২০০ বছরের ইতিহাসে গোর্খা ছাড়া অন্য কাউকে নিয়োগ করা হয় না।
তৃণমূল সাংসদ উল্লেখ করেছেন, স্বাধীনতার ইতিহাসে গোর্খা রেজিমেন্টের বড় ভূমিকা রয়েছে। শুধু তাই নয় ১৯৭১-এর যুদ্ধের সময় এবং কার্গিল যুদ্ধের সময়ও গোর্খা রাইফেলসের সদস্যরা বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন তৃণমূল সাংসদ। আর সেই প্রসঙ্গ টেনে তাঁর দাবি গোর্খাদের মধ্যে এই রেজিমেন্টের কাজ করার যে উৎসাহ রয়েছে, তা অন্যান্যদের ক্ষেত্রে সমানে নাও হতে পারে। তৃণমূল সাংসদের দাবি, গোর্খারা জন্মসূত্রে যোদ্ধা। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, বর্তমানে অন্তত গোর্খাদের মধ্যে দু কোটি যুবকের চাকরি নেই। তাঁদের ওই রেজিমেন্টে চাকরির সুযোগ না দিয়ে, গাড়োয়াল ওকুমায়ুনের বাসিন্দাদের কেন সুযোগ দেওয়া হচ্ছে? অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
কিছুদিন আগেই একটি খবর প্রকাশ্যে আসে, যেখানে জানা গিয়েছে যে কেন্দ্রীয় সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে, যাতে উত্তরাখণ্ড থেকেও গোর্খা রাইফেলসে নিয়োগ করা যায়। প্রস্তাব ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। উত্তরাখণ্ডে মূলত পার্বত্য এলাকায় প্রায় প্রত্যেক পরিবারের সদস্যই সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। সেই কারণেই ২০০ বছরের ইতিহাস ভেঙে সেই এলাকার সদস্যদের গোর্খা রাইফেলসে সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। বর্তমানে ভারতে ৭ টি গোর্খা রাইফেল রেজিমেন্টের ৪০ ব্যাটেলিয়ান রয়েছে, যেখানে নেপালি গোর্খা রয়েছে ৬০ শতাংশ ও ভারতীয় গোর্খা ৪০ শতাংশ।
আরও পড়ুন : Bipin Rawat Helicopter Crash: হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার ভিডিয়ো করা মোবাইল ফরেন্সিক তদন্তে পাঠাচ্ছে পুলিশ