লখনউ: খোদ বিচারকই পাচ্ছেন না ন্যায়বিচার। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি লিখে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করলেন উত্তর প্রদেশের এক মহিলা বিচারক। কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশিত তথ্য থেকে দেখা গিয়েছে, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যায় দেশের সবকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে আগে রয়েছে উত্তর প্রদেশ। এখন দেখা যাচ্ছে, মহিলা বিচারকরাও তার ব্যতিক্রম নন। আর পাঁচজন সাধারণ মহিলার মতোই সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে মহিলা বিচারপতিরও। অভিযোগের আঙুল আবার আরেক বিচারকের দিকেই। বিচারকের আসনে বসেও, ওই মহিলা বিচারককে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এই গুরুতর অভিযোগ করেছেন উত্তর প্রদেশের বান্দা জেলার সিভিল আদালতের এক মহিলা বিচারক। ২০২২ সালে তিনি বারাবঁকি জেলায় নিযুক্ত ছিলেন। সেই সময় সেখানকার জেলা আদালতের বিচারক তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছিলেন বলে অভিযোগ তাঁর। শুধু তাই নয়, জেলা আদালতের ওই বিচারক তাঁকে রাতে তাঁর বাড়িতে আসার জন্যও চাপ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন ওই মহিলা বিচারক। এই বিষয়ে তিনি অবিলম্বে এলাহাবাদ হাইকোর্টে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। জেলা আদালতের ওই বিচারকের শাস্তির দাবি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, একজন বিচারক হয়েও তিনি ন্যায়বিচার পাননি। অভিযুক্ত বিচারকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ তো দূরের কথা, বিতার প্রক্রিয়াই এখনও শুরু হয়নি।
এর ফলে যারপরনাই হতাশ, মহিলা বিচারক। আর কোনও উপায় না দেখে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছেন তিনি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “একজন বিচারক হয়েও যদি ন্যায়বিচার না পাই, তাহলে সাধারণ মানুষের কী হবে। এই প্রশ্নটা ওঠা স্বাভাবিক। যে বিচারক অন্যকে ন্যায়বিচার দেন, তিনি নিজে যখন বিচার পাচ্ছেন না, তখন সাধারণ মানুষের কী হবে?” বিচারক আরও জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি অভিযোগ জানানোর পর, সেই অভিযোগ গ্রহণ করতে করতেই ৬ মাস সময় লেগেছে। অথচ, এই প্রক্রিয়া ৩ মাসের মধ্যে শেষ করার কথা। তিনি এই নিয়ে একটি রিট পিটিশনও জাখিল করেছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টে। কিন্তু, তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বান্দা জেলা থেকে রোজ তাঁকে এলাহাবাদে যেতে হচ্ছে, মামলার তাগাদা দিতে।