কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা যে হারে ডিএ পান সেই হারে দিতে হবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ। এই দাবিতে বিগত এক বছর ধরে একটানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। কখনও চলেছে অবস্থান বিক্ষোভ, আবার কখনও রাজপথে চলেছে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে মিছিল। এবার আরও বেড়েছে আন্দোলনের ঝাঁঝ। একেবারে আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। শহিদ মিনারের পাদদেশে চলা সেই অনশন ইতিমধ্যেই ১৪৪ ঘণ্টা পার করে ফেলেছে। অনশনে বসছেন ৪ জন। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী ষাটোর্ধ্ব অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য।
রিপোর্ট বলছে, এদিন সকাল থেকেই তাঁর কিটোন বডি পজেটিভ। বেলার দিক থেকে ক্রমেই বাড়তে থাকে শারীরিক সমস্যা। তারপরই তাঁকে দ্রুত নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপতত সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রসঙ্গত, শুধু অনশন করেই থেমে থাকতে চাইছেন না সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। ২৯ জানুয়ারি থেকে অনশনেরও ডাক দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই আবার আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অনশনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্যপালকে চিঠিও লিখেছেন। এমনকী হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন, কারও যদি কিছু হয় তাহলে আগুন জ্বলবে বাংলায়।
অনিরুদ্ধবাবু অসুস্থ হতেই চিন্তায় রয়েছেন তাঁর সহযোদ্ধারাও। সংগ্রামী যৌথ আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলছেন, “আমি নিষেধ করেছিলাম ওনাকে অনশনে বসতে। বিগত এক বছর ধরে প্রতিদিন মঞ্চে আসেন। আন্দোলনটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, রাজ্যে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের সঙ্গে যে বঞ্চনা হচ্ছে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে চেয়েছেন। অন্তত ৮০ শতাংশ অবসরপ্রাপ্ত কর্মী রয়েছেন যাঁদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। মহার্ঘভাতা না পাওয়ার জন্য ওষুধের টাকা পর্যন্ত জোটে না। উনি বলছিলেন উনি তাঁদের প্রতিনিধি হিসাবে অনশনে বসছি। আমরা আটকানোর চেষ্টা করলেও পারিনি। বাড়িতে ওনার অসুস্থ স্ত্রী রয়েছেন। তা নিয়েও অনিরুদ্ধদা মানসিকভাবে চাপে ছিলেন।” এখানেই না থেমে সরকারকেও একহাত নিয়েছেন তিনি। বলেন, “আগামী ২৯ তারিখ থেকে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। ধর্মঘট, কর্মবিরতি, অনশন, মিটিং, মিছিল, ডেপুটেশন, কোর্টের নির্দেশ, সব কিছুর পরেও যদি সরকার নির্বিকার থাকে তাহলে আর কী বলার থাকতে পারে।”