কলকাতা: ব্রিগেডের পরিকল্পনা থেকে প্রার্থী তালিকা। দলে যোগদান করানো থেকে ভোটের মুখে প্রচারের সুর বেঁধে দেওয়া। সবেতেই নাকি চেনা ছন্দে ফিরছেন তিনি। ফলে দলের রাশ কি আবারও ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই চলে যাচ্ছে, এই প্রশ্নই এখন জোড়াফুল জনতার চোখে-মুখে। দলের অন্দরে ‘নবীন-প্রবীণ’ দ্বন্দ্বের আবহ কাটিয়ে আবারও সেনাপতির ভূমিকায় দলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ , এমনই বলছেন একাংশের তৃণমূলীরা।
একাংশের পর্যবেক্ষকদের মতে, অভিষেক মানেই নতুন স্ট্র্যাটেজি , নয়া চমক। চমকপ্রদ ন্যারেটিভ নির্মাণ করে হাওয়া ঘুরিয়ে দেওয়ার কৌশল ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের রাজনীতির অন্যতম ইউএসপি (USP)। আর তাই ব্রিগেড সমাবেশ ঘিরে নতুন কী কী চমক থাকছে তা নিয়ে উৎসাহ কিছু কম নেই রাজনৈতিক মহলের।
প্রথমেই মঞ্চ নির্মাণে অভিনবত্ব। তিনটি মঞ্চের সঙ্গে জনগণকে ‘কানেক্ট’ করতে থাকছে ৩৩০ ফুট দীর্ঘ র্যাম্প বা পাটাতন। সাধারণত কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সমাবেশে র্যাম্প দেখা যায়। তবে তা আয়তনে ছোট। কিন্তু ব্রিগেডে এত বড় র্যাম্প তৃণমূল তো বটেই এর আগে বাংলার কোনও রাজনৈতিক দলের সমাবেশেই দেখা যায়নি। টিম তৃণমূল এই সভার নাম দিয়েছে ‘জন-গর্জন’। নাম থেকেই স্পষ্ট এই সমাবেশ হল রাজনৈতিক প্রত্যাঘাতের। শুধু তাই নয়, সন্দেশখালি কাণ্ডের পর সমালোচনায় জীর্ণ শাসকদল ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিতে চলেছে ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে। পাশাপাশি কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতেও ভোটের আগে ভোকাল টনিক দিতে চলেছে দল, এমনটাই খবর।
পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই কেন্দ্রের বঞ্চনা ইস্যুকে হাতিয়ার করেছেন অভিষেক। তবে এবার মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুধু বঞ্চনার অভিযোগ নয় ,বরং বঞ্চনা, এজেন্সি তৎপরতা সহ একঝাঁক অভিযোগের বিরুদ্ধে গর্জনই এখন তৃণমূলের স্ট্র্যাটেজি । অর্থাৎ পাল্টা আক্রমণ, পাল্টা কর্মসূচি।
সন্দেশখালি পরবর্তী পর্বে মনোবল চাঙ্গা করতে ভরা ব্রিগেডের এমন অভিনব আয়োজন অভিষেকেরই মস্তিষ্ক প্রসূত বলে মনে করছে তৃণমূল শিবিরের একাংশ। রাজনৈতিক কারবারিদের ধারণা, রবিবারের এই জনসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাত করতে গিয়ে বেশ কিছু পদ্ম নেতা ও বিধায়কদেরও যোগদান করানো হতে পারে। এমনকী, বেশ কয়েকজন প্রার্থীর নামও ঘোষণা হয়ে যেতে পারে বলে অনুমান। তবে তৃণমূল শিবিরের দাবি, প্রথা মেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাস ভবন থেকেই প্রকাশিত হবে পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা ।
২০২১ এর কঠিন ভোট যুদ্ধ কিংবা ২০২৩-এর সাগরদিঘি পরবর্তী পঞ্চায়েত নির্বাচন। হাওয়া ঘুরিয়ে বারে বারে সাফল্য নিয়ে এসেছেন অভিষেক, এমনই মনে করেন সেনাপতি-ঘনিষ্ঠরা। এবার সন্দেশখালির পর শিয়রে লোকসভা । জণ গর্জন কি পারবে তৃণমূলের পালে বাতাস টানতে ? বড় পরীক্ষা। পরীক্ষা নিঃসন্দেহে অভিষেকের সেনাপতিত্বেরও।