কলকাতা: ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারকে ডাকা হয়েছিল নবান্নে। সেখানেই বৈঠকে নেওয়া হয়েছে নয়া সিদ্ধান্ত। সূত্রের খবর, এবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকল্প পথে বেতন দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। ঠিক হয়েছে, এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মী, অধ্যাপক, উপাচার্যদের বেতন যাবে ট্রেজারি থেকে। ঠিক যেমনভাবে বেতন পান অন্যান্য সরকারি কর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট মারফত আর দেওয়া হবে না বেতন।
আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির এই বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে যেত। সেটাই এবার পরিবর্তনের ভাবনা সরকারের। সরাসরি ট্রেজারি থেকে তাদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে টাকা। পাশাপাশি জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ডের লেনদেনও সেন্ট্রালি করার ভাবনা। এদিনের বৈঠকে এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর।
বিকল্প বেতন প্রক্রিয়া এইচআরএমএস (হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) নিয়ে এদিন দিনভর বিস্তর আলোচনা হয় নবান্নে। সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই প্রক্রিয়া চালু করতে চেয়েছিলেন। যদিও এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষেও এদিন বিস্তর মতামত উঠে এসেছে। এই প্রক্রিয়া চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বতা পুরোপুরিভাবে উচ্চশিক্ষা দফতরের হাতে চলে যাবে। আশঙ্কা এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব হবে। এমনই মত বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির। তাঁরা এই স্বাধিকার খর্ব করার চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনি পথে হাঁটবেন বলেও জানতে পারা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে সংঘাত চলছে। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই রাজ্যপাল তথা আচার্য উপাচার্য নিয়োগ করছেন বলে সরব হন শিক্ষামন্ত্রী। এমনকি, এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবসের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্তব্ধ করিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছেন রাজ্যপাল। এর পরই অর্থনৈতিক অবরোধ প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব।” মমতার সেই হুঁশিয়ারির পরই এদিন নবান্নের তরফে এই পদক্ষেপ। যা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা। তাহলে কি ঘুরিয়ে উপাচার্যদের রাশ থাকবে নবান্নের হাতে?