কলকাতা: কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তথ্য দিয়ে এসেছিলেন অভিষেক, আর সেই তথ্যের ওপর ভর করেই একের পর এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নাম না করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে যে দাবি অধীর করেছেন, তা রাজ্য রাজনীতিতে সাড়া ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বহরমপুরের সাংসদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে যাতে বিজেপি সরকার গড়তে পারে, সে ব্যাপারে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতিও নাকি দিয়ে এসেছিলেন ‘খোকাবাবু’। একদিকে, যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে, তার মধ্যেই কংগ্রেস নেতার এমন দাবি চাঞ্চল্যকর।
অধীর বলেছেন, “২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর খোকাবাবু দিল্লিতে গিয়ে ইডি-র দফতরে গিয়ে তথ্য উগরে দিয়ে এসেছেন। তার ওপর ভিত্তি করেই তৃণমূলের একের পর এক নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। সেদিন খোকাবাবু এটাও প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিল যে ৭৩ জন এমএলএ সঙ্গে আছেন, আপনাদের বাংলা দখলের ব্যবস্থা আমি করে দেব।” কার্যত বিজেপির সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। অধীরের দাবি, সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারছেন না বলেই অভিষেককে ইডি-সিবিআই চাপ দিচ্ছে।
অভিষেকের নাম না করলেও আদতে যে তাঁর কথাই বলা হয়েছে, তা তাঁর মন্তব্য স্পষ্ট। কারণ অভিষেকই ওই সময় ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, কয়লা-কাণ্ডে একাধিকবার তলব করা হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে। দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরে হাজিরাও দিয়েছেন অভিষেক। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই, তলব করেছে ইডি-ও। সেই আবহেই এই বিস্ফোরক দাবি অধীরের।
তবে অধীরের বিরুদ্ধেই পাল্টা তোপ দেগেছে ঘাসফুল শিবির। তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, এতদিন আমরা দেখেছি শুভেন্দু অধিকারী বা দিলীপ ঘোষরা ইডি-সিবিআই-এর ভিতরের কথা বলতেন। এমনভাবে বলতেন যাতে বিজেপি নেতাদের কেন্দ্রীয় সংস্থার এজেন্ট বলে মনে হত। সেই দলে যে অধীর ঢুকে গিয়েছেন, তা জানা যায়নি। জয়প্রকাশের দাবি, অধীরের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এতই অনিশ্চিত যে এই ধরনের এলোমেলো কথা বলতে শোনা যাচ্ছে তাঁকে।
আঁতাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে অধীরকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, একদিকে প্রবল গরম। অন্যদিকে, সিপিএমের সঙ্গে জোট করেও সাংসদ হতে বহরমপুরের সাংসদ হতে পারবেন কি না, সেই চাপও আছে। ভোটের অঙ্ক মেলাতে পারছেন না অধীর। আবার দিল্লিতে গিয়ে দেখছেন, তাঁর দলই দুর্নীতির অভিযোগ থেকে তৃণমূলকে রক্ষা করার জন্য আইনজীবীদের নামিয়ে দিচ্ছেন। এসব দেখে অধীরবাবু বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন। তাঁর বিশ্রামের প্রয়োজন।