কলকাতা: সময় যত গড়াচ্ছে আরজি কর কাণ্ডে ততই বাড়ছে রহস্য। ইতিমধ্যেই এক নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনায় তার ভূমিকা কী ছিল তা নিয়ে বাড়ছে চাপানউতোর। সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই তাঁকে পুলিশ পাকড়াও করেছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে ২২ বছরের ওই মহিলা চিকিৎসকের অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট খুন-ধর্ষণের ইঙ্গিত মিলেছে। কলকাতা পুলিশের তরফে তদন্তের জন্য তৈরি করা হয়েছে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)
একদিকে যখন রণক্ষেত্র আরজি-কর হাসপাতাল চত্বর, পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের চলছে মারপিট, ধস্তাধস্তি। সেই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার মধ্যেই আরজি কর হাসপাতালে পৌঁছলেন সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সিপিএম নেতা বলেন, “কেন চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ করে মেয়েদের জন্য মেডিক্যাল কলেজে রেস্টরুম থাকবে না? সব জায়গায় থাকে। কেন বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ঢুকতে পারবে না? কেন জুনিয়র ডাক্তাররা ঢুকতে পারবে না? তারা এলেই গন্ডগোল করা হবে? প্রিন্সিপাল নিজে অপরাধী। তাঁকে সরাতে হবে। স্বাস্থ্য দফতর আজ ইলিশ উৎসব করছে? আমায় আসতে হল কেন? যখন ছাত্ররা বিক্ষোভ করছে তখন পুলিশ উল্টে তাদের ধরছে। ওই মেয়েটা আমার মেয়েটা আমার হতে পারত, আপনার হতে পারত। একসময় কলকাতাকে বলতাম সিটি অফ জয়, এখন বলব সিটি অফ ভয়।”
চিকিৎসক খুনে উত্তপ্ত আরজি কর হাসপাতাল। বিক্ষোভকারী ছাত্রদের বেদম মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। টেনে হিঁচড়ে আন্দোলনকারীদের সরাচ্ছে পুলিশ। কারোও জামা ছিঁড়ছে, কাউকে টেনে তোলা হচ্ছে গাড়ি। প্রতিবাদীদের কার্যত কিল-ঘুষি-চড় থাপ্পাড় মারা হয়েছে। পাল্টা এক পুলিশ কর্মী দাবি করেছেন, তাঁকেও মারধর করেছে বিক্ষোভকারীরা।
অভিযুক্তের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ আদালতের। ২৩ তারিখ অবধি হেফাজতে থাকছেন ওই ব্যক্তি।
আরজি করের সহকর্মীদের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে আরও দুজন পিজিটি (স্নাতকোত্তর পড়ুয়া)-র সঙ্গে ডিউটি করছিলেন মহিলা জুনিয়র চিকিৎসক। রাত ২ টোয় ডিনার সারেন তাঁরা। আর ৩ টে নাগাদ বিশ্রাম নিতে যান। একটানা ৩৬ ঘণ্টা ডিউটি চলে, তাই সেমিনার রুমেই বিশ্রাম নেন চিকিৎসকেরা। ওই মহিলা চিকিৎসক একাই ঢুকেছিলেন সেমিনার রুমে।
রাতে বাকি দুজনের সঙ্গে আর কথা হয়নি তাঁর। সকালে রাউন্ডের জন্য ডাকতে গেলে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়।
১. অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।
২. বিচারবিভাগীয় স্বচ্ছ তদন্ত করতে হবে। ফাস্ট ট্র্যাক বিচারব্যবস্থা প্রয়োজন।
৩. যথাযথ ডিউটি রুম ও তার নিরাপত্তা থাকা প্রয়োজন।
৪. নিরাপত্তা রক্ষী থাকতে হবে, যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
৫. পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে।
৬. আবাসিক হস্টেলে নিরাপত্তা দিতে হবে।
১. শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে।
২. চোখ থেকে বেরিয়ে এসেছে রক্ত, যেটা স্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছেন মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা। গোপনাঙ্গে পাওয়া গিয়েছে ‘ফ্লুইড’।
৩. প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে স্পষ্ট হচ্ছে হোমিসাইড শাখার আধিকারিকদের ইঙ্গিত। প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ স্পষ্ট হচ্ছে।
৪. ঘটনাটি ঘটেছে রাত ৩টে থেকে ভোর ৬টার মধ্যে। ছাত্রীর গলার ডান দিকের একটা হাড় ভাঙা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সাধারণত গলায় হাত দিয়ে টিপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করা হলে এরকমভাবে হাড় ভাঙার ঘটনা ঘটে।
আরজি করের পাশে দাঁড়িয়ে জরুরি পরিষেবা ব্যতিরেকে কর্মবিরতি সিএনএমসি, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, এসএসকেএমও। AIIMS RDAর তরফে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে বিবৃতি দিয়ে।
আর জি করের ঘটনায় বিবৃতি জারি করল দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠেছে।
শনিবার বিকাল ৪টে নাগাদ আরজিকর কাণ্ডে নিন্দা জানিয়ে মোমবাতি মিছিল সব মহিলা চিকিৎসকদের। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে শুরু করে আরজিকর পর্যন্ত এই মিছিল হবে।