নয়া দিল্লি: সামনেই লোকসভা নির্বাচন। বছর ঘুরলেই ভোট। তার আগে রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধতে কোমর বাঁধছেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষরা। কিন্তু এসবের মধ্যেই উঁকিঝুঁকি মারতে শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরের একাংশের ক্ষোভ। বিশেষ করে বীরভূম জেলায়। সরব হচ্ছে প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতিদের একাংশ। খোলা চিঠি লেখা হচ্ছে দলের নেতৃত্বের কাছে। দলের একাংশের নেতারা টাকার বিনিময়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠছে। লোকসভা ভোটে যখন এ রাজ্যের মাটিতে পদ্ম ফোটাতে মরিয়া বঙ্গ বিজেপি শিবির, তখন এই ধরনের অভিযোগ কতটা অস্বস্তি বাড়াচ্ছে বিজেপির অন্দরে? বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম হাজরার সঙ্গে। কেন নীচু তলার কর্মীদের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না, সেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তিনিও।
কোনও রাখঢাক না রেখেই অনুপম বললেন, “বাংলার মানুষ জেনে গিয়েছে তৃণমূল কী। এবার যদি দেখা যায় বিজেপির মধ্যেও দুর্নীতিগ্রস্ত লোক আছে, তাহলে আমাদের উচিত দলকে স্বচ্ছ রাখা। আমাদের অভিভাবক নরেন্দ্র মোদী স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করেন। আজ যখন একেবারে বুথ স্তরের কর্মীরা আঙুল তুলছেন, তখন তা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। বুঝতে হবে, তাঁরা মাটির খবর আরও বেশি রাখেন। যখন এই ধরনের অভিযোগ উঠছে, তখন আরও বেশি সতর্ক বা যত্নবান হওয়ার কথা।”
এইসব ঘটনার ফলে যাতে বিজেপির ভাবমূর্তি কোনওভাবে নষ্ট না হয়, সেই দিকেও যত্নবান হওয়া দরকার বলে মনে করছেন তিনি। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, “গত ১০ বছরে মোদীজি মানুষের যে ভরসা ও বিশ্বাস অর্জন করেছেন, সেটা অটুট রাখা আমাদের নৈতিক কর্তব্য। যে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বার বার দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠছে, আবার তাঁকেই পদে পুনর্বহাল করা হচ্ছে… এটা কী বার্তা দিচ্ছে? যাঁরা এই খোলা চিঠি লিখছেন, তাঁরা আসলে হার্ডকোর মোদী ভক্ত। তাঁরা মোদীজিকে পাগলের মতো ভালবাসেন। মোদীজির দলেও এমন লোক থাকতে পারে, এটা তাঁরা মানতে পারছেন না।”
কেন ওই নেতাকে পদ থেকে সরানো হচ্ছে না, সেই নিয়েও প্রশ্ন অনুপমের। তাঁর সোজাসাপ্টা বক্তব্য, যাঁর বিরুদ্ধে এতবার অভিযোগ উঠছে, তাঁকে কেন দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে না? তাঁর প্রশ্ন, “সরিয়ে দিতে সমস্যা কোথায়? নাকি তাঁর মাথার উপর বিশেষ কারও হাত আছে বলে সরাতে পারছেন না? তাহলে তো বুঝতে হবে ডাল ম্যায় কুছ কালা হ্যায়। কোন নেতার আশীর্বাদ তাঁর মাথার উপর রয়েছে?”
যদিও অনুপমের এই বক্তব্য নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বলেন, “এটি নিয়ে আমি কিছু বলব না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গোটা বিষয়টি দেখছে।” সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “এইসব কথা সংবাদমাধ্যমের কাছে বলে কোনও লাভ হবে না। সংবাদমাধ্যমে বলে তো উনি জেলা সভাপতি বদল করতে পারবেন না। যদি তাঁর মনে হয়, কোনও জেলা সভাপতি পরিবর্তন করার প্রয়োজন, তাহলে দলের অন্দরে বলতে হবে। সর্বভারতীয় সভাপতিকে বলতে পারেন, বা আমাকেও বলতে পারেন।”