কলকাতা : সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর ঘটনা হল বগটুইয়ের গণহত্যা। সারা রাজ্য তোলপাড় হয় সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। গত ২১ মার্চ রাতে একের পর এক বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বগটুই গ্রামে। তদন্ত শুরু হওয়ার পর এমন তথ্যই প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছিল গোয়েন্দাদের হাতে। ওই ঘটনায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত। আর সেই ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে কেন জামিন দিয়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। আদালতের নির্দেশে বর্তমানে ওই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। আধিকারিকদের দাবি, গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ঘটনায় অভিযুক্ত দুই নাবালককে জামিন দেওয়া হয়েছে। এই আর্জি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে সিবিআই। মঙ্গলবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি।
সিবিআই যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে, সেখানে উল্লেখ করেছে, অভিযুক্ত ২ জন নাবালককে শুনানির প্রথম দিনই জামিন দিয়ে দিয়েছে নিম্ন আদালত। পরে ৩০ এপ্রিল ওই দুই নাবালকের জামিন বাতিল করার আর্জি জানিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু সেই আর্জিও খারিজ হয়ে যায় নিম্ন আদালতে। এরপরই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে সিবিআই। এ দিকে বগটুই সংক্রান্ত আরও একটি মামলা করেছেন আইনজীবী অনিন্দ্য সুন্দর দাস। সেখানেও তিনি উল্লেখ করেছেন, দুজনকে জামিন দেওয়ার বিষয়টি।
সিবিআই-এর আরও দাবি, জামিনের কারণ হিসেবে অভিযুক্তরা যে নাবালক, এ কথা উল্লেখ করা হয়নিয়। শুধু টোটো ড্রাইভার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কেস ডাইরিও নেই বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। এমনকি জামিনের কপিও দেওয়া হয়নি। সিবিআই আদালতে দাবিব করেছে, এরা বাইরে থাকলে হুমকি দিতে পারে। এ দিন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শেষ হয়েছে। রায়দান আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ বীরভূমের রামপুরহাটের ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভাদু শেখকে। আর সেই খুনের বদলা নিতে বগটুই গ্রামের ১০ টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরের দিন সকালে আটজনের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়। দিন কয়েক পর রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়। পরে আরও একজনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয় ১০।