Bansdroni: সোনা-টাকা লুঠের পর মোবাইল-ল্যাপটপ ঝুলিতে পুরতে ভুলে গেছিল চোর, ৭ দিন পর নীলাঞ্জনার ফ্ল্যাটে আবারও আগমন ! আরও বড় ‘সাফল্য’ চোরের
Bansdroni: অভিযোগ পেয়ে এদিনও পুলিশ তদন্তে আসে। পুলিশের অনুমান, বড় কোনও দল, যারা অনেকক্ষণ ধরে তাণ্ডব চালায়। পুলিশের অনুমান, অপারেশনের আগে অভিযুক্তরা রেইকি চালিয়েছে। নীলাঞ্জনা কখন বাড়ি থেকে বের হোন, কখন বাড়িতে থাকেন না, সবটাই নজরে রাখত অভিযুক্তরা।
কলকাতা: সাত দিন আগে তিনি মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। যখন ফেরেন, দেখেন গোটা বাড়ি লণ্ডভণ্ড। তছনছ সর্বত্র। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ভাঙাচোরা সব জিনিস। লোহার দরজা কাটা, কাঠের দরজা ভাঙা। আলমারি থেকে খোয়া গিয়েছে সোনার গয়না, নগদ টাকা। কলকাতার বাঁশদ্রোণীর প্রগতি পার্কের বৃদ্ধা নীলাঞ্জনা বসুর বুঝতে দেরি হয়নি কী হয়েছে! থানায় যান, পুলিশ জিডি করে। কিন্তু এফআইআর নয়। বৃদ্ধা বাড়ি ফেরেন। আতঙ্কে ছিলেনই। সেই আতঙ্কের রেশ কাটিয়ে উঠতে গিয়েছিলেন বোনের বাড়ি। মাঝের সাত দিনের ব্যবধান। বোনের বাড়ি থেকে যখন ফিরলেন, তখন দেখলেন বাড়ির আরও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। ঘরের প্রধান দরজা আবারও ভাঙা। বুকটা ছ্যাৎ করে ওঠে নীলাঞ্জনার। ঘরের প্রধান দরজার পরই লিভিং রুম, তাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে সর্বত্র। আর শোওয়ার ঘরে গিয়ে দেখেন আবারও আলমারি ভাঙা। শুধু তাই নয়, ডেস্ক টপ, ল্যাপটপ, মোবাইল খোয়া গিয়েছে সব। এমনকি বাথরুম থেকে গিজার , রান্নাঘর থেকে ওয়াটার পিউরিফায়ার পর্যন্তও খুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো বোধহয় আর নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই মাটিতেই আছড়ে ফেলে রেখে গিয়েছে চোরের দল। বাঁশদ্রোণীতে সাত দিনের মধ্যে একই বাড়িতে পর পর দুবার চোরের হানা। আতঙ্কে নিরাপত্তাহীনতায় বাড়িতে থাকতে পারছেন না একাকী বৃদ্ধা।
দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রনির প্রগতি পার্ক এলাকায় একাই থাকেন নীলাঞ্জনা। তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়েছে অনেক আগেই। নীলাঞ্জনার বক্তব্য, সাত দিন আগে ১ জুলাই রাতে তিনি যখন মেয়ের বাড়ি ঘুরতে গিয়েছিলেন, তখন প্রথম চুরির ঘটনা ঘটে। বাড়ি ফিরে সবটা দেখে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মহিলার দাবি, পুলিশ জিডি করলেও, এখনও প্রথম চুরির FIR হাতে পাননি বৃদ্ধা।
এরপর সোমবার সকালেই নীলাঞ্জনা তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রাতে ফেরেননি। মঙ্গলবার সকালে ফিরতে আবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃক্তি। সোমবার রাতেও দ্বিতীয়বার চোরের দল হানা দেয়। অভিযোগ, গোটা বাড়ি লণ্ড ভণ্ড করে, ডেস্ক টপ, ল্যাপটপ, মোবাইল থেকে শুরু করে বাথরুম থেকে গিজার , রান্নাঘর থেকে ওয়াটার পিউরিফায়ার পর্যন্ত খুলে নিয়েছে চোরের দল।
অভিযোগ পেয়ে এদিনও পুলিশ তদন্তে আসে। পুলিশের অনুমান, বড় কোনও দল, যারা অনেকক্ষণ ধরে তাণ্ডব চালায়। পুলিশের অনুমান, অপারেশনের আগে অভিযুক্তরা রেইকি চালিয়েছে। নীলাঞ্জনা কখন বাড়ি থেকে বের হোন, কখন বাড়িতে থাকেন না, সবটাই নজরে রাখত অভিযুক্তরা। সেই বুঝেই অপারেশন চালিয়েছিল। মঙ্গলবারের ঘটনার পর নীলাঞ্জনা ডিসি-র দ্বারস্থ হয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বৃদ্ধা।
নীলাঞ্জনা বলেন, “কী বলবো, কিচ্ছু বলার নেই। আমাদের এই পাড়ায় আরও অনেক বৃদ্ধ বৃদ্ধা রয়েছেন, যাঁরা বাড়িতে একা থাকেন। তাঁরা আমার বাড়িতে খোঁজ নিতে আসছেন। সবার মুখেই এক কথা, আজ আমার সঙ্গে হয়েছে, কাল তাঁদের সঙ্গেও হতে পারে। সবাই আতঙ্কিত আমরা। এই যদি প্রশাসনের অবস্থা হয়, তাহলে কী বলার আছে।”