Protest for Recruitment: আন্দোলনকারীদের চুল-দাড়ি কেটে ‘কাঠবিড়ালির ভূমিকায়’ বর্ধমানের বিধান

TV9 Bangla Digital | Edited By: সোমনাথ মিত্র

Nov 10, 2022 | 7:27 PM

Protest for Recruitment: বিধান বাবু বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানাব, যাতে এই আন্দোলনকারীদের চাকরি হয়।'

Protest for Recruitment: আন্দোলনকারীদের চুল-দাড়ি কেটে কাঠবিড়ালির ভূমিকায় বর্ধমানের বিধান
ধরনা মঞ্চে বিধানবাবু

Follow Us

সুমন মহাপাত্র

কাঠবিড়ালিও বড় ভূমিকা পালন করেছিল রামচন্দ্রের সেতুবন্ধনের সময়। হোক না সে ক্ষুদ্র। তার নিঃস্বার্থ অবদান বিফলে যায়নি। আজও তাই মুখে মুখে ফেরে রামায়ণের সেই কাঠবিড়ালির সেতুবন্ধনের গল্প। দুর্নীতি আর নিজেদের হকের চাকরি আদায়ের জন্য চাকরিপ্রার্থীরা ৬০৬ দিন ধরে যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই আন্দোলনে ‘রামায়ণের কাঠাবিড়ালির’ ভূমিকা পালন করছেন বর্ধমানের বিধান প্রামাণিক। তা কীভাবে?  

বিধান বাবু বর্ধমানের রাজগঞ্জের মোহনঅন্তরে থাকেন। সেখানেই একটি সেলুনে কাজ করেন। মাস গেলে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা রোজগার করেন তিনি। আর প্রত্যেক বৃহস্পতিবার সেলুন বন্ধ থাকায় তিনি বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। ওই দিন তিনি ভবঘুরেদের চুল দাড়ি কেটে বেড়ান। তাঁর কথায়, “যাঁরা ভবঘুরে, যাঁদের অর্থ নেই, তাঁদের চুল দাড়ি কেটে দিই।” বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর মনে হয়েছে, এই আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা অবহেলায় পড়ে রয়েছেন। তাঁদের যত্ন নেওয়ার কেউ নেই। দিনের পর দিন আন্দোলন করায় চুল কাটারও সময় পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই তাঁদের নিয়ম করে চুল দাড়ি কেটে দেন বিধান। কোনও পয়সা নেন না। পয়সা দিতে গেলে বিধানবাবু অমলিন একটা হাসি দিয়ে বলেন, “ অর্থ দিয়ে সাহায্য করার ক্ষমতা নেই। তাই এভাবে যদি একটু সাহায্য করি ক্ষতি কী। ”

৬০৬ দিন ধরে চলছে আন্দোলন। প্রতিদিন ধর্মতলায় এসে ধরনা দিচ্ছেন চাকরি প্রার্থীরা। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষাকর্তারা জেলবন্দি হলেও, বঞ্চনার শেষ কোথায়, তা এখনও বুঝতে পারছেন না বহু চাকরিপ্রার্থী। নিয়োগের জটিলতা কাটেনি এখনও। আর সেই চাকরি প্রার্থীদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারীদের ধরনা মঞ্চে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা যায়। এক ব্যক্তি চাকরি প্রার্থীদের চুল-দাড়ি কাটছেন। জানা গেল, আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে বর্ধমান থেকে কলকাতা ছুটে এসেছেন তিনি। তিনি বিধান প্রামাণিক। পেশায় নাপিত। বর্ধমানের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি একটি সেলুনে কাজ করেন। কিন্তু তাঁকে আন্দোলনের মঞ্চে দেখে অবাক হয়েছেন অনেকেই।

চাকরিপ্রার্থীদের এই দীর্ঘ আন্দোলনের নজির ভূ-ভারতে বিরল। হয়তো আগামী দিনে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিতে পারে এই আন্দোলন। সেই পাতায় বিধানবাবুর নাম থাকবে কিনা জানা নেই, কিন্তু বিধানবাবুর গল্প ইতিমধ্যে মুখে মুখে ফিরছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে। যদিও বিধানবাবুর এ সবের ভ্রুক্ষেপ নেই। তাঁর এখন একটাই আর্জি, “ওদের চাকরিটা হোক। মুখ্যমন্ত্রী প্লিজ দেখবেন।”

Next Article