কলকাতা: বিধানসভায় প্রথমবার বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য পেশ। প্রথমবারেই মাতিয়ে দিলেন বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক তথা অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী। বুধবারই বিধানসভায় বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছে রাজ্যের শাসকদল। বৃহস্পতিবার তা নিয়েই ছিল আলোচনাপর্ব। সেই পর্বে বিজেপির ‘ক্যাপ্টেন’ হয়ে ময়দানে নামেন অশোক লাহিড়ী। বাজেটের মতো শক্ত বিষয়কেও অনায়াসে বুঝিয়ে দেন লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকসের এই অধ্যাপক। একেবারে যেন চির চেনা মাস্টারমশাই।
বাজেট সংক্রান্ত আলোচনার জন্য এদিন বরাদ্দ ছিল তিন ঘণ্টা। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় পেয়েছেন অশোকবাবু। আধ ঘণ্টা নিচু স্বরে বক্তৃতা করেছেন তিনি। ক্লাসে পড়া বোঝানোর মতো করে একটার পর একটা বিষয় তুলে ধরেছেন। দল-মত নির্বিশেষে সবাই মন দিয়ে শুনেছেন তাঁর কথা। সেই সময় অধিবেশন কক্ষে যদি পিন পড়ত, বোধহয় সে শব্দও শোনা যেত।
শুরুতেই অশোকবাবু বলেন, পশ্চিমবঙ্গের জন্য এই বাজেট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে তুলে ধরেন এ বাজেটে বিভ্রান্তি কোথায়!যুক্তির পাহাড়ে চড়েই তা বোঝান এই অর্থনীতিবিদ। তবে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে এও বলেছেন, সেই যুক্তি বিরোধীরা খণ্ডনও করতে পারেন।
আরও পড়ুন: বিধানসভায় কাণ্ড বটে! সব্বাইকে চমকে দিয়ে লক্ষ্মীবারের বাজেট আলোচনায় ‘হাজির’ সুকুমার রায়
সমস্যা একটাই হয়েছিল। এদিন দেখে পড়তে গিয়ে কিছুটা বাধার মুখে পড়েন তিনি। বিধানসভায় দেখে পড়ার রীতি নেই। এ কথা তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। অশোকবাবুও জানান, কষ্ট করে লিখে এনেছেন। এদিনের বক্তব্যে অশোক লাহিড়ী দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গ পিছিয়ে পড়েছে। যুক্তি হিসেবে উঠে আসে রাজ্যবাসীর পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া, চিকিত্সার জন্য ভেলোর বা অন্যত্র যাওয়ার উদাহরণ। এ রাজ্যের পড়ুয়াদের অন্য রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়াও পিছিয়ে পড়ার সূচক হিসেবে তুলে ধরেন তিনি। তবে শুধুই বিরোধিতা নয়। রাজ্য সরকারকে পরামর্শও দেন এক সময়ের ভারত সরকারের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। বর্তমানে তিনি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সদস্য। পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রসঙ্গও উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে।