কলকাতা: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের (TMCP Foundation Day) ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের অধিকাংশ জুড়েই ত্রিপুরা প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর কথায়, “এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ত্রিপুরায় পা রাখেননি। উনি পা রাখলে ত্রিপুরায় ভূমিকম্প হবে।” আর মমতা ও অভিষেকের ভাষণের প্রেক্ষিতে কাউন্টার অ্যাটাক করল রাজ্য বিজেপি। সাংবাদিক বৈঠক থেকে রাজ্য বিজেপি-র পাল্টা কটাক্ষ, ‘অতিমারিতে জীবন-জীবিকা বিপন্ন, তার উপর ভূমিকম্প!’
শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে ত্রিপুরায় ফের তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। তবে এ নিয়ে রাজ্য বিজেপি কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের (Shamik Bhattacharya) মন্তব্য, “এটা ত্রিপুরা বিজেপির পার্টি অফিস নয়। ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গের শাখা অফিস। ত্রিপুরায় বিজেপি আছে। সেখানে মুখপাত্র আছে, সেখানে মন্তব্য করবেন।” তবে এর পরেই অভিষেকের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শমীকের কটাক্ষ, “এমনি অতিমারিতে মানুষ বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে। জীবন জীবিকা কার্যত বাজেয়াপ্ত হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে আবার যদি ত্রিপুরায় ভূমিকম্প হয়, তবে সে মানুষগুলির কথা ভেবে শঙ্কিত হচ্ছি।” একইসঙ্গে তৃণমূলের উদ্দেশে তাঁর চ্যালেঞ্জ, “ত্রিপুরায় বিধানসভায় খাতা খুলে দেখান। তার পর কথা হবে। স্বপ্ন দেখা ভাল, তাতে শরীর মন দুটোই ভাল থাকে।”
এদিন কয়লা-কাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতাদের দিকে আঙুল তুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেছেন, একডজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নাম বলতে পারেন, ‘যারা কয়লা লুটে খেয়েছে। কয়লা মাফিয়াদের হোটেলে তোমাদের নেতারা থেকেছে। অভিষেককে রাজনৈতিক ভাবে লড়ছে, রাজনীতিতে না পেরে প্রতিহিংসা করছে।” যার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি বলে, আসানসোলকে যারা লুটেছে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যদি নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তিনি ইডি-কে জানান।
কেন্দ্রীয় সংস্থা বেসরকারিকরণ ও বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে এদিন তাদের তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, দেশের সব বেচে দিয়েছে। এখন তো শুধু চোখ-মুখ-নাক-কান বেচতে বাকি আছে। এর প্রতিক্রিয়ায় রাজ্য বিজেপির তরফে শমীক বলেন, “বিভিন্ন ভাষায়, বিভিন্ন ভাবে একজন কবি তাঁর অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন। সে ধরনের কবি-মন নিয়ে এই বক্তব্য খণ্ডন করার মতো মেধা আমার নেই। তৃণমূল বারবার এ ধরনের কথা বলে চলেছে। বিক্রি আর লিজের মধ্যে তফাতটা করতে পারছে না। তিনি (পড়ুন মুখ্যমন্ত্রী) বিক্রি করার চেষ্টা করছেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সম্পদ। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই যে, পরিচালনার অভাবে সেগুলো কার্যকর হচ্ছে না। মেট্রো ডেয়ারি, দুর্গাপুর কেমিক্যালস কী হয়েছে?”
এদিকে এদিন পিএম কেয়ার্সের স্বচ্ছতা নিয়েও ফের প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা নিয়ে রাজ্য বিজেপির বক্তব্য, বিজেপি কখনও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করেনি। মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে কখনও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেনি বিজপি।
নন্দীগ্রামে তাঁকে খুন করার চেষ্টা হয়েছে, বলে এদিনও ফের অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তবে তিনি ভয় পান না, সিংহের মতো লড়াই করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন বিরোধীকে। এ নিয়ে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, “মুখ্যমন্ত্রীর সুস্থ শরীর ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। তিনি মারা যাবেন কেন! তিনি পশ্চিমবঙ্গেই থাকবেন। তবে একটু সময়ের অপেক্ষা, তাঁকে আবার বিরোধী নেত্রী হয়েই থাকতে হবে।” আরও পড়ুন: ‘মমতা ত্রিপুরায় পা রাখলে ভূমিকম্প হবে’, হুঁশিয়ারি অভিষেকের