কলকাতা: রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আজ, সোমবার। বৈঠকে থাকতে পারেন দলের শীর্ষস্তরের নেতা বি এল সন্তোষ। বিজেপির রাজ্য কমিটির ঘোষণার পরে দলের মধ্যে যে বিদ্রোহ শুরু হয়েছে, সেই বিদ্রোহ এবার জেলা জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এবং ইনচার্জদের নাম ঘোষণা পরে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার কয়েকজন বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন। দলের রাজ্য ও জেলার বিভিন্ন গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন বাঁকুড়ার ৫ বিধায়কও। পরিস্থিতি সামলাতেই আজকের বৈঠক বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার বাঁকুড়ার পাঁচ বিধায়ক দলের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন একসঙ্গে। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর জেলার সাংগঠনিক জেলা সভাপতিদের পরিবর্তন করা হয়। বাঁকুড়ায় সুনীল রুদ্র মণ্ডল ও বিষ্ণুপুরে বীলেশ্বর সিংহকে। সেই নিয়ে চাপা উত্তেজনা ছিল। বিজেপি বেশ কয়েকজন নেতা মন্ত্রীর বক্তব্য, পরিবর্তন করে যাঁদের আনা হচ্ছে. তাতে সাংগঠনিক কাঠামো আরও দুর্বল হবে। তবে সুনীল রুদ্র ও বীলেশ্বরের এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে চাননি গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া বিধায়করাও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে নিঃসন্দেহে বিজেপির মুখ পুড়ছে। এতে শুধু বাঁকুড়ার ক্ষেত্রে কিংবা মতুয়া সম্প্রদায়ের বিধায়করাই করছেন, তেমনটা নয়, এই বিক্ষুব্ধ নেতাদের সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
যেভাবে সভাপতি নিয়োগ হয়েছে, যাঁদেরকে করা হয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সব জেলায় বিজেপি বিধায়ক নেই, তাই সব ক্ষেত্রেই এমনটা হবে না। তবে যে সব জেলাতে বিজেপি বিধায়করা রয়েছেন, তাঁরা এই ভাবেই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। অর্থাৎ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়ে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন।
এই অসন্তোষ বিজেপিকে ভাবাচ্ছে, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আজ, বিজেপির বৈঠক রয়েছে। রাজ্য কমিটির সভাপতি, সদস্যদের নিয়ে বৈঠক হবে। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকও যোগ দেবেন। সেখানে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি কিছু বার্তা দিতে পারেন, কিন্তু সেই টোটকা কতটা কাজে লাগবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মুহূর্তে নিজেদের সিদ্ধান্তেই অটল থাকতে পারেন বিজেপি নেতৃত্ব। অর্থাৎ যাঁরা সভাপতি হয়েছেন, তাঁরাই আপাতত থাকবেন। নতুন করে আর সভাপতি পরিবর্তিত হবেন না। সেক্ষেত্রে বিক্ষুব্ধ নেত ও কর্মীদের উদ্দেশে কোনও বার্তা দিতে পারেন তাঁরা। সমঝোতার পথে নিয়ে আসতে পারেন।
এদিকে, পুরভোট নিয়ে পরাজিত বিজেপি প্রার্থীরা বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন। টাকা নিয়ে তৃণমূলের কাছে বিকিয়ে গিয়েছেন কর্মীরা। তার জেরে অন্তর্ঘাত আর বিপুল হার। এ যেন সরষের মধ্যেই ভূত! পুরভোট নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন পরাজিত প্রার্থীরা। সবমিলিয়ে চরম অস্বস্তিতে বিজেপি।
আরও পড়ুন: Municipal Corporation Election 2021: ২ দফায় বাকি পুরসভার ভোট! পুরভোট নিয়ে আজ সর্বদলীয় বৈঠকে কমিশন