কলকাতা: বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচগ্র মেদিনী। বিখ্যাত এই প্রবাদকেই অনুপ্রেরণা করে ভবানীপুরে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি। মাস চারেক আগে একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর স্বাদ পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। নতুন করে ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে নিখুঁত পরিকল্পনা করতে চাইছেন বঙ্গ বিজেপি নেতারা। সেই উদ্দেশ্যে শনিবার সকাল থেকেই রণনীতি ঠিক করতে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব বৈঠক করছেন। সূত্রের খবর, তৃণমূল সুপ্রিমোকে ফের ধাক্কা দিতে চেয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেই বৈঠকে।
কী কী সিদ্ধান্ত? বিজেপি সূত্রে খবর, সবার প্রথম গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ভবানীপুরের যে যে ওয়ার্ডে কম ভোট পেয়েছিল, সেই এলাকাগুলিকে টার্গেট করা হচ্ছে। সেখানে ঘনঘন বিজেপি নেতা-কর্মীদের, এবং প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকেও যেতে বলা হয়েছে। এমনকি, পিছিয়ে থাকা ওয়ার্ডে একটি করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে প্রচার করা যা কিনা, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকার সব বুথে এজেন্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি নেতারা। বুথে থাকা কোনও এজেন্টকে যদি ভয় দেখিয়ে কেউ তুলে নিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে যাতে আরেকজন বসতে পারেন সেই জন্য প্রতি বুথে দু’জন করে এজেন্ট দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, শাসকের প্রচারের আলোর সামনে যাতে গেরুয়া আভা ফিকে না হয়ে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে প্রচুর পরিমাণে পোস্টার-ব্যানার ছাপানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ তাঁদের আশঙ্কা, বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে থাকা পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে দিতে পারে শাসকদল। যতবার পোস্টার ছেঁড়া হবে, ততবার যাতে নতুন পোস্টার লাগানো যায়, সেই ভাবনা থেকেই এই সিদ্ধান্ত।
ভুলে গেলে চলবে না, ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে জেতানোর জন্য যাদের মাঠে নামানো হয়েছে, তাঁরা একসময় তৃণমূলের বিশ্বস্ত সৈনিক ছিলেন। প্রিয়াঙ্কার নির্বাচনী এজেন্ট করা হয়েছে সজল ঘোষকে। এবং নির্বাচন পরিচালনার জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তার মাথায় রয়েছেন অর্জুন সিং। সঙ্গে সৌমিত্র খাঁ-ও সেই কমিটিতে রয়েছেন। এঁরা সকলেই একদা তৃণমূল কংগ্রেসের উল্লেখযোগ্য মুখ। ফলে তৃণমূলের জালেই তৃণমূল সুপ্রিমোকে জড়ানোর ফন্দি যে বিজেপির পক্ষ থেকে ফেঁদে ফেলার চেষ্টা চলছে, সেটা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার।
আরও পড়ুন: Bhawanipore By-Election: কোন পথে এগোবে প্রিয়াঙ্কার প্রচার, বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্ব
ফলে একটা বিষয় ইতিমধ্যেই স্পষ্ট, লড়াইটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তুলনায় রাজনীতিতে আনকোরা প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের হলেও, এই ভোটযুদ্ধের স্টিয়ারিং রয়েছে অভিজ্ঞ হাতে। এবং যে ভাবেই দ্বিতীয়বার মমতাকে ধাক্কা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিজেপি। লড়াইটা একপেশে হবে এমন তো নয়-ই, বরং সেয়ানে-সেয়ানের টক্কর দেখবে ভবানীপুর।