কলকাতা: টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত এলাকা। সেখানেই লেজ ঝাপটে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এগারো কেজি সাতশো গ্রাম ওজনের পেল্লাই আকারের কাতলা মাছ (Katla Fish)। বুধবার কলকাতায় বৈদিক ভিলেজের কাছে জমা জল থেকে এমনই মাছ ঘরে তুললেন রাজারহাট শিখরপুরের বাসিন্দা সৌমিত্র নস্কর।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন শহরের একাধিক এলাকা। কৃষি জমির পাশাপাশি মাছ চাষের জন্য যে সমস্ত ফিশারি তাও জলের তলায়। বহু জায়গাতেই বৃষ্টির জমা জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা স্বাদের মাছ। এলাকার লোকজনও ছিপ-জাল নিয়ে নেমে পড়ছেন সেই মাছ ধরতে। তবে বেশির ভাগই ছোট মাছ গাঁথছেন বড়শিতে। রাজারহাট শিখরপুর এলাকার বাসিন্দা সৌমিত্র নস্করের কপালটা একটু বেশিই ভাল ছিল বুধবার।
শিখরপুর সংলগ্ন বৈদিক ভিলেজের সামনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন সৌমিত্র। জাল ফেলে মাছ ধরা শুরু করতে প্রথমে ছোটখাটো বেশ কিছু মাছ উঠে এসেছিল। এরপর জাল টান দিতেই সৌমিত্রের মনে হয়, জালে ভারী কিছু একটা আটকেছে। জাল গুটিয়ে এনে যা দেখলেন, তাতে চোখ ছানাবড়া। বিশালাকার এক মাছ ধরা দিয়েছে তাঁর জালে।
প্রথমটা কী মাছ বুঝতে পারেননি। পাড়ে এনে দেখেন মাছে-ভাতে বাঙালির অন্যতম প্রিয় কাতলা জালবন্দি। দাড়িপাল্লায় ওজন করে দেখেন এগারো কেজি সাতশো ওজন মাছটির। এদিকে বৃষ্টির জমা জলেই এমন বাজিমাত দেখতে সৌমিত্রের বাড়িতে ভিড় জমে যায়। বহু মানুষ মাছটি দেখতে নস্কর বাড়িতে যান। অনেকেই মাছটি কিনতেও চান। তবে কোনও মতেই সেই মাছ বিক্রি করতে চায়নি তারা।
বরাবরই মাছ ধরার নেশা সৌমিত্র নস্করের। বৃষ্টিতে এলাকা প্লাবিত হলেই জাল নিয়ে রাত বেরাতে মাছ ধরতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সৌমিত্র। বুধবারও তেমনটাই করেছিলেন তিনি। সৌমিত্র জানান, “বৈদিক ভিলেজের বেশ কয়েকটি জলাশয় প্লাবিত হয়েছে। সেখানে বড় বড় মাছ থাকতে পারে বলে আগেই আন্দাজ করেছিলাম। পাশাপাশি বৈদিক ভিলেজের আশেপাশে মাছিভাঙা, গাজিপুর, নতুনহাট এলাকার মাছের ভেড়ি জলে ডুবে গিয়েছে। সেই ভাবনা মাথায় ছিল। মাছ পাব আশা ছিল। কিন্তু এত বড় মাছ ধরতে পারব আশা করেনি।” এগারো কেজির উপরে কাতলা যেমন ধরেছেন, একই ভাবে গত দু’দিনে সৌমিত্রের জালে আশি কিলোর বেশি মাছ ধরা পড়েছে বলে জানান তিনি।
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে একেবারে ভেসে গিয়েছে রাজারহাটের শিখরপাড়া সংলগ্ন এলাকা। চারপাশে শুধুই জমা জল। এই এলাকার প্রচুর মাছের ভেড়ি রয়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে সেসব একেবারে টইটম্বুর। রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা রকমের মাছ। আর সেই মাছ ধরতে সকাল-বিকেল জাল নিয়ে বসে এলাকার মানুষ। স্থানীয়দের কথায়, ভেড়ি ভরে জল ঢুকে গিয়েছে বাড়িতেও। পুকুরের মাছ সব ভেসে গিয়েছে। ঘরদোরেও ঢুকে পড়ছে মাছ।
আরও পড়ুন: Road Accident: ভয়ঙ্কর পথদুর্ঘটনা! কাদার পাঁক থেকে তুলে আনা হচ্ছে একের পর এক মৃত পরিযায়ী শ্রমিক