BJP: উপভোটের আগে বামেদের জোড়া ফলায় বিদ্ধ করতে ময়দানে BJP?
Suvendu Adhikari: জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে খানিকটা অক্সিজেন ঢুকেছে বামেদের। অন্তত তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিরোধীদের দাবি, চিকিৎসকদের এই আন্দোলন চালিত হয়েছে বাম-অতিবামেদের মদতে।
কলকাতা: সামনেই উপনির্বাচন। ছ’টি কেন্দ্রে আগামী ১৩ নভেম্বর ভোট রয়েছে। তার আগে ময়দানে সব রাজনৈতিক দল। একদিকে যখন বামেরা সিপিআইএম-কে জোট সঙ্গী বানিয়েছে। সেই সময় তাদের ব্যাকফুটে ফেলতে তৃণমূলের পাশাপাশি আসরে বিজেপিও। ‘হিন্দু ভোট ঐক্যবদ্ধ ও সিপিএম-এর ভোট ভাঙ’ জোড়া ফলায় বিদ্ধ করছে তারা।
জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে খানিকটা অক্সিজেন ঢুকেছে বামেদের। অন্তত তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিরোধীদের দাবি, চিকিৎসকদের এই আন্দোলন চালিত হয়েছে বাম-অতিবামেদের মদতে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে বৈঠকের পর আপাতত যে যার মতো ডিউটিতে ব্যস্ত চিকিৎসকরা। এই বিষয়টিকেই হাতিহার করেছে বিজেপি।
অভিযোগ, আরজি কর আন্দোলন বিপথে চালিত করেছে বাম এবং অতি বাম। এই নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই চড়া সুরে আক্রমণ করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা। শুভেন্দু বলেছিলেন, “বাম এবং অতি বামেরা এই আন্দোলনের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে।” মঙ্গলবার প্রাক্তন সিপিআইএম নেতা তথা রাজ্যে প্রাক্তন সংখ্যালঘু উন্নয়ন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা মন্ত্রী আব্দুস সাত্তার মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার পরই আরও বিজেপির অভিযোগ আরও যেন ঘৃতাহুতি পড়েছে। অভিযোগের সুর আরও উচ্চগ্রামে নিয়ে গেলেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, অমিত মালব্যরা। সুকান্তকে বলতে শোনা গিয়েছে, “ডাক্তারবাবুদের আন্দোলন সেমিফাইনালে গিয়ে হেরে গেল। একদম চোকার্স।”
আরজি কর কেন্দ্রিক নাগরিক আন্দোলনকে বিপথে চালিত করার পুরস্কার স্বরূপ সদ্য কংগ্রেস ত্যাগী প্রাক্তন সিপিআইএম নেতাকে উপদেষ্টা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে সিপিআইএমকে লোকসভা ভোটে বিজেপির আসন কমার জন্য দায়ী করে সাত্তারকে উপদেষ্টা হওয়াকে ‘ফিশ ফ্রাই’ পলিটিক্স বলে কটাক্ষ করছেন শুভেন্দু অধিকারী। সে ক্ষেত্রে সনাতনী ভোটের প্রসঙ্গ তুলেছেন শুভেন্দু। তাই বামেদের একটি ভোট দিলে তা আদতে তৃণমূলের ভোট বাক্সে পড়বে বলেও নিশানা অমিত মালব্যর।
একইসঙ্গে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ওবিসি কোটা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান মুখ হয়ে উঠেছিলেন সাত্তার। সেই কথাও নতুন করে স্মরণ করিয়ে আদতে হিন্দুত্বের পথে হাঁটার কথা বুঝিয়ে দিচ্ছেন সুকান্ত মজুমদার, অমিত মালব্যরা। একদিকে হিন্দু ভোট ঐক্যবদ্ধ করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া, অন্যদিকে বামেদের ও কংগ্রেসের ঝুলিতে থাকা ভোট আরও নিজেদের দিকে নিয়ে আসতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারীরা। তাই কি সিপিআইএমকে চাঁচাছোলা আক্রমণ? চর্চা রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে।
বুঝিয়ে দেওয়া আরজি করের নাগরিক আন্দোলন বিপথে চালিত হওয়ার দায় সবটাই বামেদের? সেই কারণে কি এভাবে পুরস্কারের প্রসঙ্গ টানলেন শুভেন্দু অধিকারী। একইসঙ্গে, হিন্দুত্বের অস্ত্রে শান দিতেই কি বারবার করে সাম্প্রতিক কালে অশান্তি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে সরব হয়ে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সংখ্যালঘু ভোট মিলবে না ধরে নিয়ে হিন্দু ভোটকেই শুধু মাত্র টার্গেট করে এগোনোর পথে হাঁটছেন শুভেন্দু অধিকারীরা।
যার প্রভাব সদস্যতা অভিযানেও লক্ষ্যণীয়। সেই কারণেই রাজ্যের সংখ্যালঘু প্রভাবিত বুথ গুলিকে বাদ রেখেই এক কোটির লক্ষ্যে এগোতে চাইছে পদ্ম শিবির, চর্চা রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যে এভাবে শুধুমাত্র হিন্দুত্বের অস্ত্রে তৃণমূলকে বিঁধে ক্ষমতায় আসা যাবে কি না, তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে।