কলকাতা: ২০২১-এর নির্বাচনে বাংলায় জোর প্রচার চালিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তখন একে একে অভিযোগও সামনে আসতে শুরু করেছে। সেই বছর বিধানসভা নির্বাচনেও অনায়াস জয় পায় তৃণমূল। তবে বিজেপি বারবার ২১-এর নির্বাচনকে তাদের সাফল্য বলেই দাবি করে এসেছে। কারণ, ওই ভোটের পর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় তাদের সংখ্যা ৩ থেকে ৭৭ হয়। রাজ্যের ইতিহাসে বিজেপির এমন ফলাফল আগে দেখা যায়নি। বিগত সাড়ে তিন বছরে রাজনীতির জল গড়িয়েছে অনেক দূর। একে একে সংখ্যা কমেছে গেরুয়া শিবিরের। এবার বাংলার উপ নির্বাচনের পর কত দাঁড়াল সেই সংখ্যা?
নিশীথ প্রামাণিক- সাংসদ থাকাকালীন ২০২১-এর বিধানসভা দিনহাটা থেকে ভোটে লড়েন তিনি। জিতেও চান। পরে বিধায়ক পদ ছেড়ে সাংসদ পদে বহাল থাকেন। ফলে বাদ পড়েন তিনি।
মনোজ টিগ্গা– পরপর দুবারের বিধায়ক তিনি। ২০২১-এও জয়ী হয়েছিলেন মাদারিহাট কেন্দ্র থেকে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন তিনি, জয়ী হয়ে সাংসদও হন। এরপর বিধানসভা ছাড়েন টিগ্গা। আজ, শনিবার উপ নির্বাচনে সেই মাদারিহাটে জয়ী হল তৃণমূল।
মুকুটমণি অধিকারী- রাণাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি। ২০২৪-এর ঠিক আগে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুটমণি। জয়ী হয়ে আপাতত তিনি তৃণমূল সাংসদ।
বিশ্বজিৎ দাস– বাগদা বিধানসভা থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। কিন্তু ভোটের পর থেকেই তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা আবারও বাড়তে থাকে। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থীও হন তিনি। সেই সময় বিধায়ক পদ ছাড়েন বিশ্বজিৎ।
কৃষ্ণ কল্যাণী- বিজেপির টিকিটে ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। ভোট মিটতেই তিনিও ঘেঁষতে থাকেন ঘাসফুলের দিকে। বেশ কিছুদিন ধরে খাতায় কলমে বিজেপি বিধায়ক থাকলেও, লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার পর বিধায়ক পদে ইস্তফা দেন তিনি। যদিও লোকসভায় পরাজিত হন, তবে উপভোটে জিতে আপাতত বিধায়ক তিনি।
জগন্নাথ সরকার- নিশীথ প্রামাণিকের মতোই সাংসদ পদ বহাল রাখতে শান্তিপুরের বিধায়কের পদ ছাড়েন জগন্নাথ সরকার।
বিষ্ণুপদ রায়- প্রয়াত হন বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়। এরপর ২০২৩ সালে উপনির্বাচন হয় ধূপগুড়িতে। সেখানে জয়ী হন তৃণমূলের নির্মলচন্দ্র রায়।
অর্থাৎ ৭ জনকে বাদ দিলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা কমে হচ্ছে ৭০। এছাড়া, কয়েকজন বিধায়ককে দলবদল করতে দেখা গিয়েছে। তবে তাঁরা যে ফুলেই থাকুন না কেন, বিধানসভায় তাঁরা বিজেপি বিধায়ক হিসেবেই বিবেচিত হবেন। মুকুল রায়, হরকালী পতিহার, তন্ময় ঘোষ, সুমন কাঞ্জীলালের দলগত অবস্থান নিয়ে রয়েছে জল্পনা।