কলকাতা: গোর্খাদের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হলেন আরও এক বিধায়ক। জন বার্লার পর এ বার কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হলেন।
সূত্রের খবর, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে চিঠি দিয়ে এই কথা জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে ঠিক কী জানিয়েছেন বিধায়ক?
বিষ্ণুপ্রসাদ জানিয়েছেন, পাহাড়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁদের মনোভাব ও আবেগে বিশেষ নজর দিতেই ওই চিঠি লিখেছেন। তাঁর আরও দাবি,উত্তরবঙ্গের মানুষের যে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন, যেখানে উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন থমকে গিয়েছে, সেখানে তাঁদের পক্ষে পৃথক রাজ্যের দাবি নায্য। তাই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কাছেই চিঠি লিখেছেন তিনি।
কার্শিয়াঙের বিধায়কের কথায়, “উত্তরবঙ্গের মানুষ বারবার বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আমি সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছি। এখানে রাজ্য বিজেপির কোনও হাত নেই।” কার্যত, এর আগে বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছিলেন। সেবার বিজেপির তরফ থেকে মন্তব্য করা হয়েছিল, বার্লা যা বলেছেন তা সবটাই তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। বিজেপি বাংলা ভাগ চায় না। তখন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন দিলীপ ঘোষ। এ বার ফের সেই তালিকায় যোগ দিলেন বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা।
তবে কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়কের আগেও শিখা চট্টোপাধ্যায়, আনন্দময় বর্মণ, বরেন চন্দ্র বর্মণ পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলে সরব হয়েছিলেন। শীতলকুচির বিধায়ক বরেন চন্দ্র বর্মণের কথায়, “উত্তরবঙ্গে এত বছরে কোনও উন্নয়ন হয়নি। এখানে একটা ভাল হাসপাতাল নেই। ডাক্তার নেই। চিকিত্সা নেই। একটা ভাল কলেজ তৈরি হয়নি। উত্তরবঙ্গের মানুষ বঞ্চিত। ফলে পৃথক রাজ্য হোক। মানুষের জন্য কাজ হোক।”
বিজেপির এই দাবির বিরুদ্ধে যদিও বরাবরই সরব হয়েছে তৃণমূল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, “দক্ষিণবঙ্গ পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে। উত্তরবঙ্গও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে। কোনওরকম ভাগাভাগি আমি করতে দেব না। রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া এসব হবে না। বিজেপি যদি মনে করে জলপাইগুড়ি বিক্রি করে দেব, অত সস্তার নয়, বিজেপি যদি মনে করে আমি আলিপুরদুয়ার বিক্রি করে দেব, কোচবিহার বিক্রি করে দেব, দার্জিলিং বিক্রি করে দেব, অত সস্তার নয়। আমি বাংলাকে পরাধীন করতে দেব না। নিজেরা দিল্লি সামলাতে পারে না।”
অন্যদিকে, গ্রেটার কোচবিহার আন্দোলনের নেতা বংশীবদন বর্মনের পৃথক রাজ্যের দাবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেন আদিবাসী সংগঠন ভারতীয় মূলনিবাসী আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতা তথা তৃণমূলের এসসি এসটি সেলের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ লাকড়া (Rajesh Lakra) ওরফে টাইগার। পৃথক রাজ্যের দাবিতে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেন রাজেশ (Rajesh Lakra) ও বংশীবদন। যদিও, বার্লার মন্তব্যে সমর্থন জানাননি রাজেশ। এ বার ফের নতুন করে বিজেপির আরও এক বিধায়কের দাবিতে কার্যত শোরগোল রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: বিদ্যুতের খুঁটি নাকি চুরি গিয়েছে! সন্দেহের জেরেই আইন নিজহাতে তুলে নিলেন রক্ষকরাই