নজরে সংখ্যালঘু, লক্ষ্য ‘সোনার বাংলা’, লক্ষ্মীবারে প্রকাশ হতে পারে বঙ্গ বিজেপির ইস্তেহার
রাজ্যে আসছেন বিজেপি (BJP) সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2021) উপলক্ষে আগামিকালই সোনার বাংলা (Sonar Bangla) ইস্তেহার (Manifesto) প্রকাশ করবেন তিনি।
কলকাতা: বুধবার ফের রাজ্যে আসছেন বিজেপি (BJP) সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda)। সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2021) উপলক্ষে আগামিকালই সোনার বাংলা (Sonar Bangla) ইস্তেহার (Manifesto) প্রকাশ করবেন তিনি। একমাত্র বিজেপিই সোনার বাংলা গড়তে পারে। নির্বাচনী ইস্তেহারের মাধ্যমে বাংলার মানুষকে সেই বার্তাই দিতে চায় গেরুয়া শিবির। ইস্তেহারে জোর দেওয়া হয়েছে কর্মসংস্থান এবং শিল্পস্থাপনের উপর। এমনকি, সংখ্যালঘুদের জন্যেও রয়েছে বিশেষ সুবিধার প্রতিশ্রুতি। সূত্রের খবর, বিজেপির ইস্তেহারে বলা হতে পারে- রাজ্যে থাকবে গণতন্ত্রের পরিবেশ, সম্মান দেওয়া হবে বিরোধীদের। পাশাপাশি, বাংলার আবেগ ধরতে মনীষীদের নামে হবে নানা কর্মসূচি। ইস্তেহার প্রকাশের পাশাপাশি, এবার বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি যাবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।
তবে এই ক্ষেত্রেও নতুন পন্থা নিয়েছে বিজেপি। পদ্মশিবির বারংবার ‘সোনার বাংলা’ তৈরিতে জোর দিয়ে এসেছে। সেই ‘সোনার বাংলা’ আসলে কী, তা নিয়ে একটি স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করতে সেই নামেই ইস্তেহার প্রকাশ করতে চলেছে বিজেপি। এ বাদে আরেকটি পৃথক ইস্তেহারও প্রকাশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। বিজেপির দাবি, বিগত কয়েক দশকে বাংলা যে উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল তা সম্ভব হয়নি সব ক্ষেত্রে রাজনীতিকরণের কারণে। যা যা হয়নি, ক্ষমতায় এসে সেগুলোই করতে চায় বিজেপি।
কী অ্যাজেন্ডা মুরলীধর সেন লেনের?
বিজেপির সর্বপ্রথম উদ্দেশ্য কর্মসংস্থান। দেশজুড়ে বেকারত্ব ছবিটা যেরকম হোক না কেন, রাজ্যে পালাবদল হলে প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরির বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী শাহ-নাড্ডারা। পাশাপাশি কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সরকার যাতে এই সুরে কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে। দুই জায়গায় এক সরকার থাকলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বঞ্চনার’ চিরাচরিত অভিযোগও তোলা যাবে না। এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে বদল এনে শিক্ষার বিস্তার করার দিকে নজর দিতে চায় বিজেপি। গত কয়েক দশক ধরে বড় শিল্পের অভাবে ভুগতে থাকা রাজ্যে শিল্প এবং বিনিয়োগের দ্বারও খুলতে চায় গেরুয়া শিবির।
আরও একটি বিষয় ইস্তেহারে না রেখেও রাজ্যবাসীর মননে ঢুকিয়ে দিতে চান বিজেপি নেতারা। সেটা হল- বাঙালি মনীষীদের প্রতি তাঁদের সম্মান। সেই চেষ্টায় বিজেপি নেতারা কতটা মরিয়া, তা ইদানিং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণে বাঙালি কবিতার ব্যবহার বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে ঋষি অরবিন্দ ভবন পরিদর্শনের মাধ্যমেই পরিষ্কার। জেপি নাড্ডার সফর সূচিও সেদিকেই ইঙ্গিত করছে।
আরও পড়ুন: নির্মাতাদের থেকে সরাসরি ভ্যাকসিন কিনতে চায় রাজ্য, মোদীকে চিঠি মমতার
সূত্রের খবর, এ দিন রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে নামবেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি। আগামিকাল সকাল ১০ টায় হেস্টিংসে বিজেপি কার্যালয়ে ‘লক্ষ্য সোনার বাংলা’ প্রচারের জন্য তহবিল সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। পাশাপাশি সোনার বাংলা ইস্তেহারও প্রকাশ হবে সেখানেই। এরপর দুপুর দেড়টা নাগাদ নৈহাটিতে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি পরিদর্শনে যাবেন। সেখান থেকে যাবেন গৌরীপুরে চটকল শ্রমিকের বাড়িতে, সারবেন মধ্যাহ্নভোজন।
খাওয়া-দাওয়া সেরে বারাকপুরে আনন্দপুরী কালীবাড়ি পরিদর্শন করবেন। এর পর অংশ নেবেন আনন্দপুরী খেলার মাঠে নবদ্বীপ এলাকার পরিবর্তন যাত্রার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে। বিকেল ৪টে ১০ মিনিটে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি পরিদর্শনে যাবেন। সেখান থেকে বেরিয়ে সাড়ে ৪টে নাগাদ মঙ্গল পাণ্ডে স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করবেন। এর পর সন্ধেয় কলকাতায় ফিরে সায়েন্স সিটিতে বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। কাল রাতেই তিনি দিল্লি ফিরে যাবেন বলে খবর সূত্রের।
আরও পড়ুন: ৬-৭ দফায় হতে পারে পশ্চিবঙ্গের নির্বাচন, চিহ্নিত করা হয়েছে ৭০০০ স্পর্শকাতর বুথ