কলকাতা: মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এনে দাঁড় করানোই মূল উদ্দেশ্য বিরোধীদের। অনাস্থা প্রস্তাবের উপর আলোচনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মণিপুর ইস্যুতে সরকারকে আক্রমণ করাই বিরোধীদের গেম প্ল্যান। মণিপুর ইস্যুতে উত্তাল সংসদ। আর তার আঁচ পড়ল বিধানসভাতেও। মণিপুর ইস্যুর প্রেক্ষিতে মমতা-সরকারকে চাপে রাখতে পাল্টা বাংলার নারী নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সরব বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করে বুধবার বিধানসভায় ওয়াক আউট করল বিজেপি। এদিন বিজেপির তরফে মুলতুবি প্রস্তাব আনা হয়। কিন্তু অভিযোগ, মুলতুবি প্রস্তাব পড়তে দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদে বিধানসভার অভ্যন্তরে বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখান। পরে ওয়াক আউট করে বাইরে বেরিয়ে এসে বিধানসভার ফটকের সামনেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
বিজেপি বিধায়কদের বক্তব্য, বাংলার একাধিকপ্রান্তে নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী পর্যায়ে একাধিক এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। মালদহের চাঁচল, পাঁচলা, কোচবিহারে নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। কিছু ক্ষেত্রে ঘটনা অবশ্য রাজনৈতিক নয়। উল্লেখ্য, কোচবিহারে নিগৃহীত নাবালিকার মৃত্যু হয় বুধবারই।
বিজেপি বিধায়কদের অভিযোগ, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মণিপুর ইস্যুতে সোচ্চার। সেখানে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছেন, তাহলে বাংলার এই সব নির্যাতনের ঘটনায় কেন চুপ? বিধানসভায় বিজেপি বিধায়করা দাবি করেন, এই ইস্যুতে অন্তত মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি দিন। অন্ততপক্ষে মুলতুবি প্রস্তাবটা পড়তে দেওয়া হোক। কিন্তু বুধবার বিধানসভায় স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কোনওটারই অনুমতি দেননি। তারপরই ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা।
বিধানসভার অধ্যক্ষ অধিবেশন কক্ষে স্পষ্ট জানান, বিরোধীরা নেই। তাঁরা ওয়াকআউট করেছেন। বিধানসভা একটি নিয়ম রীতি মেনে চলে। তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য মন্তব্য, “হঠাৎ করে মনে হল বিধানসভার টেবিল একটি পোস্টঅফিস, সেখানে চিঠি দিয়ে চলে গেলাম। তারপর আলোচনা চাইলাম, তা হতে পারে না।” অধ্যক্ষের বক্তব্য, বিজেপি যেভাবে মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছে, সেখানেই ক্রটি ছিল। সে কারণেই আলোচনায় অনুমতি দেওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ, গত দু-আড়াই বছর ধরে তাঁরা যখনই কোনও মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছে, আলোচনা করতে দেওয়া হয়নি। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।