কলকাতা: “সালকিয়ার হোমের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।” মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আটকাতে কী কী পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার? জানতে চাইলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিস্তারিত পরিকল্পনা সহ রিপোর্ট তলব করেছে আদালত।
উল্লেখ্য, ২১ নভেম্বর হাওড়ার একটি হোম এক শিশুকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। হাওড়া পুরনিগমের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়রের পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধের অভিযোগ ওঠে। তাদের গ্রেফতারও করে পুলিশ। ঘটনায় দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। মঙ্গলবার মামলার শুনানির সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান যে ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যৌন হেনস্থা, পকসো সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।
হাওড়া পুরনিগমের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়রেরও নাম জড়িয়েছিল ঘটনায়। হোম চালাতেন হাওড়া পুরনিগমের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারীর পুত্র সুমিত অধিকারী ও তাঁর পুত্রবধূ গীতশ্রী অধিকারী। হোমের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে। চাইল্ড সেন্টারের আড়ালে শিশু বিক্রির চক্র চলছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। একই সঙ্গে সেখানে রাখা শিশুদের উপর যৌন নির্যাতনেরও অভিযোগ ওঠে।
তারপরই শিশুকল্যাণ দফতরের আধিকারিক ও হাওড়া সিটি পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা তদন্তে নামেন। গত ২০ নভেম্বর রাতেই হোমটি সিল করে দেওয়া হয়। হোম থেকে বেশ কয়েকজন শিশুকে উদ্ধারও করা হয়। তদন্তের স্বার্থে সেই সময় অবশ্য পুলিশ মুখ খুলতে চায়নি। পরে সময় এগোতে এগোতে আরও বেশ কিছু নয়া তথ্য পুলিশের হাতে উঠে এসেছে এই ঘটনায়।
হোমটির খবর পাওয়ার পরই দফায়-দফায় চলে পুলিশি হানা। সঙ্গে চলে ধড়পাকড়। প্রথমে আটক করা হয় মীনতিদেবীর পুত্রবধূকেও। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটকও করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
সমাজ কল্যাণ দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও হাওড়া পুরসভা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারীর পুত্রবধূ-সহ ধৃত মোট ১০ জনকে আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা সেই সময় জানিয়েছিলেন, হঠাৎই ঘটনার দিন রাতে তাঁরা দেখেন শিশু হোমের সামনে অনেক পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি প্রাইভেট গাড়িও রাখা ছিল। পুলিশের এক জন কর্তা এসে বাচ্চাগুলিকে অন্য একটি গাড়িতে তুলছিলেন। তবে ঠিক কী কারণে করছিলেন তা তাঁরা বুঝতে পারেননি। এরপরই ধীরে ধীরে আসল ঘটনা সামনে আসে। ওই ব্যক্তি আরও জানিয়েছিলেন, এই হোমটি প্রায় আট থেকে দশ বছর ধরে চলছিল।
আরও পড়ুন : Corona Update: রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পার করল ৯০০০, কলকাতাতেই সংক্রমণ পাঁচ হাজারের দোরগোড়ায়