Calcutta High Court: ‘আপনাদের ভাষা নিয়ন্ত্রণ করুন’, IC-কে হুমকি মামলায় আদালতে ভর্ৎসনার মুখে জাতীয় মহিলা কমিশন
Calcutta High Court: আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, মহিলা কমিশনের যা নথি প্রয়োজন, পুলিশ সেটা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে পাঠাবে। যদি কোনও নথি পাঠানো সম্ভব না হয়, তার কারণও দর্শাতে হবে পুলিশকে। নথি যাচাইয়ের পর যদি কোনও পুলিশের উপস্থিতির প্রয়োজন হয়, তাহলে পুলিশ সুপার তার কোনও প্রতিনিধিকে পাঠাবেন।

কলকাতা: বোলপুরের আইসি-কে বীরভূম তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের হুমকি মামলা। বীরভূমের পুলিশ সুপারকে আগামী ১৪ জুলাই ভার্চুয়ালি জাতীয় মহিলা কমিশনের সামনে হাজিরা দিতে হবে, শুক্রবার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, মহিলা কমিশনের যা নথি প্রয়োজন, পুলিশ সেটা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে পাঠাবে। যদি কোনও নথি পাঠানো সম্ভব না হয়, তার কারণও দর্শাতে হবে পুলিশকে। নথি যাচাইয়ের পর যদি কোনও পুলিশের উপস্থিতির প্রয়োজন হয়, তাহলে পুলিশ সুপার তার কোনও প্রতিনিধিকে পাঠাবেন।
তবে এদিন শুনানির সময়ে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়েন জাতীয় মহিলা কমিশন। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “তদন্তকারী সংস্থার কাজে কীভাবে হস্তক্ষেপ করছেন ? কোন ধারা যুক্ত হবে না হবে না, সেটা নিয়ে কীভাবে নির্দেশ দেন আপনারা?”
উত্তরে মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে সওয়াল করা হয়, “আমরা কোনও নির্দেশ দিইনি, আমরা পরামর্শ দিয়েছি।” তাঁদের বক্তব্য, লঘু ধারায় মামলা হয়েছে, তাই আমরা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি তখন জানতে চান, “কীসের ভিত্তিতে আপনারা এই নির্দেশ দিচ্ছেন, আপনাদের কাছে কী তথ্য প্রমাণ আছে ?” বিচারপতি বলেন, “আপনারা দেখান যে আপনাদের কাছে যে তথ্যপ্রমাণ আছে সেটা কেস ডায়রির থেকে বেশি।”
এই প্রসঙ্গেই বিচারপতির তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “আমাদের দেশে প্রচুর কমিশন রয়েছে, সবাই যদি তদন্তকারী সংস্থার কাজে হস্তক্ষেপ করা শুরু করে, তাহলে তদন্ত কীভাবে চলবে?” জাতীয় মহিলা কমিশনকে বিচারপতির পরামর্শ, “আপনারা আপনাদের তদন্ত করুন, কাউকে ডাকতে চাইলে ডেকে পাঠান, কিন্তু কেস ডায়রি দেখতে পারেন না।”
মহিলা কমিশনের তরফ থেকে তখন আবারও জানানো হয়, “আমরা কেস ডায়রি দেখতে চাইনি।” তাদের যুক্তি, “এখানে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী। আমরা কেন্দ্র – রাজ্যকে পরামর্শ দিতে পারি। সেই অধিকার আমাদের রয়েছে।” কমিশনের তরফ থেকে আদালতে জানানো হয়, শুধুমাত্র পুলিশ আধিকারিকের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের হয়নি।
বিচারপতি তখন বলেন, “আপনাদের দেখে মনে হচ্ছে না, আপনারা তদন্ত পর্যবেক্ষণ করছেন। আপনাদের ভাষা নিয়ন্ত্রণ করুন। এই ধরনের ভাষা গ্রহনযোগ্য নয়। এটা কোনও অনুরোধ বা পরামর্শের ভাষা ?” তখন কমিশনের তরফ থেকে বলা হয়, “পুলিশ আমাদের কি উত্তর দিয়েছে সেটা একবার দেখুন, তদন্তে কোনরকম ভাবেই সহযোগিতা করছেন না।”
মামলার প্রেক্ষাপট
বোলপুরের আইসি-কে ফোনে কদর্য ভাষায় আক্রমণের ঘটনায় বিতর্কে জড়ান অনুব্রত মণ্ডল। তপ্ত হয় রাজ্য রাজনীতি। দীর্ঘ টালবাহানার পর তিন বারের নোটিস এড়িয়ে হাজিরা দেন অনুব্রত। তারপর ৯০ মিনিট পর বেরিয়েও আসেন। পরবর্তীতে দেখা যায়, আইসি-র ফোন বাজেয়াপ্ত হয় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য, কিন্তু অনুব্রতর কেন হয় না, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। জুন মাসে ডিজিকে চিঠি দেয় জাতীয় মহিলা কমিশনের। চিঠিতে অনুব্রত মণ্ডলের মোবাইল বা ডিজিটাল ডিভাইস অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করতে বলা হয়।

