কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচন (West Bengal Panchayat Election 2023) মামলায় বড় সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ জানিয়ে দিল, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে (State Election Commission) দ্রুত স্পর্শকাতর এলাকা নির্দিষ্ট করতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে হবে সব জেলায়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যাতে এই নির্দেশ কার্যকর করা হয়, সেই বিষয়টিও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হবে, নাকি রাজ্য পুলিশে ভোট হবে, তা নিয়ে প্রশ্নের উত্তর মিলল অবশেষে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বড় ধাক্কা খেল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেও শেষ পর্যন্ত ভরসা রাখল হাইকোর্ট। এর পাশাপাশি আদালত আরও জানিয়ে দিয়েছে, ভোটের কাজে যুক্ত সকলকে সরকারি আইকার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। চাওয়া মাত্রই তা দেখাতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। পুলিশকর্মী ও অবসার্ভার, ভোটকর্মী… প্রত্যেককে সঙ্গে আইকার্ড রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, এদিন সকালে হাইকোর্টে মামলার শুরুতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। এর আগে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার জন্য। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য ছিল, তারা এখনও পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেনি। সে কথা শুনে কিছুটা বিরক্ত হয়ে বিচারপতি বলেছিলেন, ‘তাহলে কি গোটা রাজ্যকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেব? সেটা ভাল হবে?’ তারপর বিকেলেও দীর্ঘক্ষণ মামলার শুনানি হয়। শেষ পর্যন্ত সন্ধেয় মামলার রায় জানিয়ে দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এবার আর আলাদা করে কোনও স্পর্শকাতর জেলা নয়, প্রত্যেক জেলার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যেক জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মাঠে নামাতে হবে বলে জানিয়ে দিল আদালত।
হাইকোর্টের এই রায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন আইনজ্ঞ মহল। কারণ, এর আগে পঞ্চায়েতের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজ্য পুলিশের উপরেই ভরসা রাখার কথা বলেছিলেন।
এদিকে আজ হাইকোর্টের রায় আসার আগে বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতে পঞ্চায়েত ভোটে মৃত্যুর হিসেব তুলে ধরেছিলেন। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করিয়েও মৃত্যু আটকানো যায়নি। মমতা আজ বিকেলেই বলেছেন, ‘২০১৩ সালে মীরা পাণ্ডে ছিলেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এসেছিলেন। তাও ৩৯ জন মারা গিয়েছিল।’