কলকাতা: আসন্ন বইমেলায় স্টল পাচ্ছে না বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাই কলকাতা হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল ‘পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড’কে। গিল্ডের প্রতিনিধিদের রীতিমতো ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে প্রকাশিত পত্রিকায় যা লেখা হয়, তা স্পর্শকাতর। এই যুক্তিতেই স্টল দেওয়া হচ্ছে না ওই সংগঠনকে। আর সেই যুক্তি শুনেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি সিনহা।
আবেদনকারী অর্থাৎ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফের আইনজীবী সুবীর সান্যাল জানান, গিল্ডের তরফ থেকে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল, বিভিন্ন শর্ত দিয়ে। সেই সব শর্ত মেনে ৬০০ স্কোয়ার ফুট জায়গার কথা বলা হয় সংগঠনের তরফে। এরপর গত ১০ জানুয়ারি ইমেল মারফত গিল্ডের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কী আপডেট আছে? আইনজীবী জানান, আজ পর্যন্ত কিছুই জানানো হয়নি। পরিষ্কার করে কিছু বলা হচ্ছে না। সেই কারণেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
গিল্ডের আইনজীবী জানান, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কোনও পাবলিশার্স নয়। বুক সেলারও নয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পত্রিকা হল ‘বিশ্ব হিন্দু বার্তা’। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নামেই আবেদন জানানো হয়েছে। বিচারপতি বলেন, “আপনারা জানতেন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নিজেদের পাবলিকেশন হাউজ আছে?” এরপর গিল্ডের আইনজীবী যুক্তি দেন, ওদের প্রতিবেদন বা বইয়ের লেখা যথেষ্ট সেন্সিটিভ (স্পর্শকাতর), কন্ট্রোভার্সিয়াল (বিকর্কিত)। গিল্ড কোনও কন্ট্রোভার্সি চায় না বলে দাবি করেন তিনি।
গিল্ডকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি সিনহা বলেন, “এত বছর ধরে অনুমতি দিয়ে এসেছেন? তখন মনে হয়নি, এই সংগঠনের লেখা স্পর্শকাতর? এত বছর তবে কেন অনুমতি দিলেন? এত বছর যখন অনুমতি দিলেন, এই বছর নয় কেন?” বিচারপতি আরও উল্লেখ করেন, এর আগের মামলা আদালত খারিজ করেছিল,কারণ তাদের কোনও পাবলিশিং হাউজের রেজিষ্ট্রেশন ছিল না। তবে এই মামলায়, মামলাকারী নিজেদের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এর স্টলের জায়গা ঠিক করে, আদালতে পরের দিন জানাতে মৌখিক নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আগামী সোমবার, ২০ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয়েছে।