কলকাতা: মালদহে (Maldah) ত্রাণ দুর্নীতি মামলায় কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ক্যাগ (CAG)-এর তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে হাইকোর্টে।
২০১৭ সালের ঘটনা। সে বছর প্রবল বর্ষণে মালদহ, মুর্শিদাবাদের একাংশে বন্যা হয়। গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গিয়েছিল সেই সময়। বাস্তহারা মানুষগুলোর জন্য রাজ্য সরকার ত্রাণের টাকা বরাদ্দ করেছিল।
কিন্তু পরবর্তী কালে দেখা যায় বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টেই বার বার বরাদ্দ টাকা গিয়েছে। অথচ প্রকৃত দুর্গতরা কোনও টাকাই পাননি। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়।
প্রায় দু’ মাস ধরে হাইকোর্টে এই মামলা ছিল। অবশেষে সোমবার আদালত নির্দেশ দিল কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ক্যাগ এই তদন্ত করবে। রাজ্যের তরফে এই তদন্তে এগোলেও কেন্দ্র সহযোগিতা করবে। তাদের তত্ত্বাবধানেই এই তদন্ত এগোবে।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ক্যাগ রিপোর্ট পেশ করবে। ২০১৭ সালের বন্যার পর ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারের জন্য ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছিল রাজ্য। যদিও সে টাকা ক্ষতিগ্রস্তরা পায়নি বলেই শেষ পর্যন্ত মামলা হয়। তাতেই সোমবার এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। সে বছর বন্যায় ভেসে গিয়েছিল মালদার বিস্তীর্ণ এলাকা। সরকারের তরফে দুর্গতদের জন্য ত্রাণের টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু সেই টানা পান না বোরুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দুর্গতরা। তাঁদের টাকা আত্মসাৎ হয়ে যায়। কাঠগড়ায় ওঠে বোরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের নাম। এই নিয়ে মামলা গড়ায় আদালতে। হাইকোর্টে প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
প্রশাসনিক সূত্রে সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিকায় নাম থাকলেও দুর্গতদের অনেকেই টাকা পাননি। তদন্তে নেমে প্রশাসন জানতে পারে, দুর্গতদের নাম থাকলেও তাঁদের নামের পাশে অন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে টাকা তোলা হয়েছে।
এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে ত্রাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মালদহেরই হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের বরোই গ্ৰাম পঞ্চায়েতের চোপালমোড় এলাকায় এক ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করা হয়। কুণালকান্তি দাস নামে ওই ব্যক্তির স্ত্রী পঞ্চায়েতের সদস্য বলে জানা যায়। অভিযুক্ত দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। গ্রামে ফিরতেই জনতার রোষের শিকার হন। প্রকাশ্যেই তাঁর ওপর চলে কিল, চড়, ঘুষি। পুলিশের সামনেও তাঁকে মারধর করে উত্তেজিত জনতা। চলে পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।