কলকাতা: শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত যতগুলি এফআইআর হয়েছে ও চার্জশিট পেশ হয়েছে, তা এবার তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যকে মুখবন্ধ খামে ওই সব নথি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম বলেন, আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের কাছে মহিলারা যে অভিযোগ এনেছেন, তার একটাও যদি সত্যি হয়, তাহলেও তা লজ্জার। ‘ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরো’ রিপোর্টে এরাজ্যকে মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, আদালতের অনুমতি নিয়ে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা সন্দেশখালিতে গিয়ে সেখানকার মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেই অনুযায়ী, হলফনামাও জমা দেন আদালতে। সেই হলফনামা আদালত কক্ষে পড়ে শোনানোর পর প্রধান বিচারপতি এমন মন্তব্য করেন।
আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, “জমিকে কেন্দ্র করে সবকিছু হয়েছে। পুলিশও যুক্ত। একটাও হলফনামা মিথ্যে হলে, সব ছেড়ে দেব। আমার কাছে যারা এসেছিল, তাদের প্রত্যেকের চোখে জল ছিল। কত বছর লাগবে এদের বিচার দিতে?” আইনজীবীর আরও দাবি, শুধু সন্দেশখালি নয়, মিনাখাঁতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। জমি নিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদ করা ধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। তিনি চান, জমি দুর্নীতি রুখতে কমিশন বসানো হোক।
প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল সওয়াল করার সময় শাহজাহানের আইনজীবী বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায় প্রতিবাদ করলে তাঁকে কার্যত ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “আপনি নিজের অন্ধকার দূর করুন, তারপর কথা বলবেন। এখন কোনও কথা বলবেন না। একটা হলফনামাও সত্যি হলে, তা লজ্জার। ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর রিপোর্টে সুরক্ষার ক্ষেত্রে প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ। আর এখানে দেওয়া একটি অভিযোগও সত্যি হলে সেই রিপোর্ট মিথ্যে।” এদিকে, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী প্রশ্ন তুলেছেন, জনস্বার্থ মামলায় অভিযুক্ত কীভাবে শুনানিতে অংশ নেন।
তবে এজি কিশোর দত্ত দাবি করেন, সন্দেশখালিতে মহিলারা থাকতে পারেন না, এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁর দাবি, দুটো অভিযোগ নেওয়া হলে ২ হাজার অভিযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে না। সন্দেশখালিতে যাওয়ার সময় ইডি পুলিশকে কিছু না জানালেও, পুলিশই নিরাপত্তা দিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।