কলকাতা: এক দুর্মূল্য পাথর সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হল দমদম থেকে। গতকাল রাতে তিন নম্বর মতিলাল কলোনি থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৫০ গ্রামের বেশি ধাতব পদার্থ। সিআইডি আধিকারিকরা মনে করছে পরমাণু বোমা তৈরির অন্যতম উপকরণ এই ক্যালিফোর্নিয়াম নামক ধাতুটি। আন্তর্জাতিক বাজারে এই ধাতুর এক গ্রামের দাম প্রায় ১৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ যে পরিমাণ ধাতু উদ্ধার হয়েছে তার মূল্য ৪ হাজার কোটির বেশি বল অনুমান।
ধৃতদের কাছ থেকে মোট চারটি ধাতুর টুকরো উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়াম ছাড়াও ইরিডিয়াম আছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ধৃতদের নাম শৈলেন কর্মকার এবং অসিত ঘোষ। দুজনেই হুগলির সিঙ্গুর এবং পোলাবার বাসিন্দা। তবে এই ধরনের তেজস্ক্রিয় ধাতু কী ভাবে এদের কাছে এল, তা নিয়ে তদন্ত করছে সিআইডি-র আধিকারিকেরা। প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকেরা মনে করছেন কোনও গবেষণাগার থেকে এই তেজষ্ক্রিয় ধাতু চুরি করে আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সিআইডি তদন্তকারী আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন যে কর্ণাটক থেকে এই ধাতব পদার্থগুলো নিয়ে আসা হয়েছিল।
ধৃত সিঙ্গুরের বাসিন্দা শৈলেন কর্মকারের পরিবারের দাবি তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি পেশায় গয়নার ব্যবসা করেন, কর্মসূত্রে কোয়েম্বাটুরে থাকতেন। কিন্তু মায়ের শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি কিছুদিন আগেই বাড়ি ফেরেন বলে দাবি পরিবারের। গতকাল সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। স্ত্রী’র সঙ্গে সন্ধেয় কথাও হয় তাঁর। তারপর পরিবার আজই জানতে পারে এই ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি তিনি পাড়ায় কারও সঙ্গে বেশি মেলামেশা করতেন না।
কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে সোনা পাচারের ঘটনা নতুন নয়। বিপুল পরিমানে সোনা পাচারের বহু উদাহারণ রয়েছে। তবে মহামূল্যবান তেজস্ত্রিয় পদার্থ ক্যালিফোর্নিয়াম পাচারেরর তেমন ঘটনা সাম্প্রতিক মনে করতে পারছেন না তদন্তকারীরা।
কী এই ক্যালিফোর্নিয়াম?
দেশে সাধারণ মানুষ এই ক্যালিফোর্নিয়াম কিনতে বা বিক্রি করতে পারে না। এটি অত্যন্ত দামি ও লাইসেন্স থাকলে তবেই বিক্রি করা যায়। জানা যাচ্ছে. কেবলমাত্র ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারে এই ধাতু পাওয়া যায়। এটি দেখতে রূপোর মতো। এটি অনেকটা সাবানের মতো। ব্লেড দিয়ে সহজেই কাটা যায়। এটি এতই বিরল যে গোটা বিশ্বে বছরে আধ গ্রাম ক্যালিফোর্নিয়াম তৈরি হয়। তাই এর মূল্য এত বেশি।
কিসে ব্যবহৃত হয় ক্যালিফোর্নিয়াম?
ক্যান্সারের চিকিৎসায় এর ব্যবহার রয়েছে। এ ছড়া এক্স রে মেশিনেও এই ধাতু ব্যবহার করা হয়। জল ও তেলের স্তর বুঝতেও এ ব্যবহার হয়। সোনা, রূপো চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে এই ধাতু ব্যবহার করা হয়। তবে সরাসরি এর সংস্পর্শে এলে কোনও মানুষ বা প্রাণীর জন্য তা প্রাণঘাতী হতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলতে পারে। বন্ধ্যাত্বও আনতে পারে এই ধাতু। আরও পড়ুন: TV9 Sting Operation: ১০ লক্ষ টাকা দিলেই মিলবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার! সরকারি নিয়োগে বড় কেলেঙ্কারি