কলকাতা : সকাল ঠিক ১০ টা ৪০ মিনিটে নিজাম প্যালেসের ১৪ তলায় পৌঁছেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মাঝে একটা বিরতি মিললেও এ দিন কার্যত ম্যারাথন জেরা করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ দিন ঠিক সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিট নাগাদ নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে আসেন মন্ত্রী। অর্থাৎ আট ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এ দিন জেরা করা হয়েছে তাঁকে। সিবিআই সূত্রে খবর, মূলত পরেশ অধিকারীর মেয়ের নিয়োগ নিয়েই এ দিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে পার্থকে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে অনেক দিন আগেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু, রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ সামনে আসতেই নতুন মোড় নেয় সেই মামলা। পরেশ অধিকারীকে ইতিমধ্যেই জেরা তিন দিন জেরা করেছে সিবিআই। আর অন্যদিকে, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। আগামিদিনে দুই মন্ত্রীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
১. আপনি যখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন, তখনই আর এক মন্ত্রীর মেয়ের চাকরি হয়েছে। আপনি কি এ কথা জানতেন?
২. আপনার সময় এত বড় দুর্নীতি হল! আপনি আটকানোর চেষ্টা করেননি? নাকি আপনাকে না জানিয়েই সবটা হয়েছে?
৩. আপনি যদি নাই জেনে থাকেন সে ক্ষেত্রে কে বা কারা থাকতে পারে এর পিছনে? কোনও অফিসার বা আমলার হাত ছাড়া কি এমনটা সম্ভব?
৪. পরেশ অধিকারীর মেয়ের চাকরির জন্য কে সুপারিশ করেছিলেন? নাকি মন্ত্রী নিজেই ফোন করেছিলেন?
৫. দফতরে এত বড় দুর্নীতি, এতগুলো পদে বেআইনি নিয়োগ। কিছুই জানতেন নাম?
৬. কিসের ভিত্তিতে উপদেষ্টা কমিটি তৈরির ক্ষেত্রে অনুমোদন দিলেন আপনি?
৭. নিয়োগের পদ্ধতিটা ঠিক কী? নিয়োগের ক্ষেত্রে উপদেষ্টাদের কী ভূমিকা থাকে?
উল্লেখ্য, আদালতে যে রিপোর্ট পেশ করেছে বাগ কমিটি, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে একটা বড় ভূমিকা ছিল উপদেষ্টা কমিটির। আর সেই কমিটিতে অনুমোদন দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এ দিন সকাল থেকে একের পর এক প্রশ্ন করা হয় পার্থকে। আদালতের নির্দেশে এসএসসি দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে তৎপর সিবিআই। সূত্রের খবর, এ দিন শুধু নিজাম প্যালেসে উপস্থিত আধিকারিকরাই নয়, দিল্লি থেকেও উচ্চপদস্থ সিবিআই কর্তারা ছিলেন ভিডিয়ো কলে। তাঁদের প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে পার্থকে।