কলকাতা : গরু পাচার কাণ্ডের (Cow Smuggling Case) তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা (CBI) পিছু ছাড়ছেন না বীরভূমের তৃণমূলে জেলা সভপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal)। বুধবার হাজিরা দিতে আসার কথা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি। তবে অনুব্রত বাবুর আইনজীবী চলে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে। সিবিআইয়ের কাছে জমা দেওয়া হয় তৃণমূল নেতার আয়-ব্যয়ের হিসেব। জমা পড়ে অনুব্রত বাবুর আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত নথি। সেই সঙ্গে জমা পড়েছে সম্পত্তির হিসেব এবং ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টও। সেই নথি হাতে পেতেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ফের তলব করলেন অনুব্রত মণ্ডলকে। শুক্রবার আবার নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়েছে বীরভূমের তৃণমূল নেতাকে।
সিবিআইয়ের এভাবে বার বার তলবের মধ্যে অস্বস্তি ক্রমেই বাড়ছে অনুব্রত মণ্ডলের। কিছুদিন আগে সিবিআই দফতরে ঢোকার সময় দেখা গিয়েছিল বুকে হাত দিয়ে, অন্যের কাঁধে ভর দিয়ে ঢুকছেন। এই পরিস্থিতিতে অনুব্রত বাবু যদি শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে হাজিরা এড়িয়ে যান, সে ক্ষেত্রেও তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, সিআরপিসির ৯১ নম্বর ধারা অনুযায়ী অনুব্রত মণ্ডলকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তাতে তৃণমূল নেতার বিগত পাঁচ বছরের আয়কর রিটার্ন, সম্পত্তির তালিকা, কোথায় কী স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে এবং তাঁর যে ক’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেগুলির তথ্য চাওয়া হয়েছিল।
গরু পাচারের যে অভিযোগটি উঠে এসেছে, তার রমরমা বাজার ছিল মূলত ২০১৫-১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালে সিবিআই মামলা নেওয়ার আগে পর্যন্ত। এদিকে গরু পাচার কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত এনামূল হক দাবি করেছে, তাঁর সঙ্গে আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। মূলত সেই কারণেই অনুব্রত মণ্ডলের আয়-ব্যয়ের হিসেব চেয়ে পাঠানো হয়েছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, যদি স্বচ্ছভাবে সব কিছু হয়ে থাকে, তাহলে আয়কর রিটার্নের হিসেবে তার উল্লেখ থাকবে। এক্ষেত্রে যদি তেমন কিছু না থাকে, তাহলেই গরমিলের সূত্র খুঁজে পাবেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সেই কারণেই এই নথি জমা নেওয়া হয়েছে বলে সিবিআই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।