কলকাতা: সন্ধ্যায় যখন প্রায় গোটা টলিউডকে (Tollywood) নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বৈঠকে বসলেন, তখন থেকেই বড় কোনও ঘোষণার অপেক্ষা ছিল। বৈঠক শেষে একে একে তারকারা বেরিয়ে এলেন। একই সঙ্গে জানা গেল, দাদাসাহেব ফালকের মতোই এবার সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) নামেও চলচ্চিত্র পুরস্কারের (Film Awards) সূচনা করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৈঠকে নাকি এমনটাই জানিয়েছেন খোদ কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর (Prakash Javadekar)।
বাংলা চলচ্চিত্র্য জগতের তামাম শিল্পীদের সঙ্গে এই বৈঠকেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জাতীয় স্তরে এই পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। ১৯৬৯ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার ঘোষণার পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনও বাঙালির নামে পুরস্কার ঘোষণা করতে চলেছে কেন্দ্র। যে সময়ে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার ঘোষণা হয়, সেই সময়েই সত্যজিৎ রায়ের নামাঙ্কিত পুরস্কার ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ব্য়াখ্যা, “সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকী রয়েছে। তাঁকে নিয়ে নতুন করে বলার নেই। তাঁর সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ নেই। তিনি নিজেই একটা অলঙ্কারে পরিণত হয়েছেন। দাদাসাহেব ফালকে যেমন পুরস্কার রয়েছে, তেমনই সত্যজিৎ রায়ের নামে পুরস্কার দেওয়ার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
শহরের পাঁচতারা হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সরকারি বৈঠকে টালিগঞ্জের সিংহভাগ তারকারা দল-মত নির্বিশেষে হাজির ছিলেন। সাহেব চট্টোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, আবির চট্টোপাধ্যায়, পাওলি দাম বাদেও ঘোষিত বাম ঘেঁষা পরিচালক অনীক দত্ত হাজির ছিলেন বৈঠকে। উপস্থিত ছিলেন অঞ্জনা বসু, চূর্ণী গাঙ্গুলি, নিসপাল সিং রানে, মহেন্দ্র সোনি, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, মমতা শঙ্কর, গৌতম ঘোষ, কাঞ্চনা মৈত্র প্রমুখ।
অন্যদিকে, গেরুয়া প্রতীক হাতে তুলে নেওয়া তারকাদের মধ্যে হিরণ চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়রা হাজির হন। বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল-সহ সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবং স্বপন দাশগুপ্তও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন। বৈঠকে বাংলা সিনেমা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হিরণ। পাশাপাশি প্রত্যেক জেলায় নন্দনের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে টলি তারকারা, কথা হল ‘সোনার বাংলা’ নিয়ে
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ভোটের মুখে এই বৈঠকে বড় এই ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের মতে, টলিউড-সহ কলকাতার বুদ্ধিজীবী মহলকে কাছে টানতেই এহেন বৈঠকের আয়োজন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, নীল বাড়ি দখলের লক্ষ্যে বাঙালির যে আবেগের জায়গাটা বিজেপি স্পর্শ করতে চাইছে, সেই চেষ্টারই একটা বড় অংশ এই পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন: কাট কালচার চলছে বাংলায়, পদ্মই আনবে আসল পরিবর্তন : মোদী