কলকাতা: গত দু’দিনে আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে করোনার থাবা লক্ষ্য করা গিয়েছে। এবার চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কোভিড নমুনার রিপোর্ট পজিটিভ। করোনা আক্রান্ত হয়েছেন নার্সেস ইউনিটির সম্পাদকও।
রাজ্যে হু হু করে চড়ছে করোনার গ্রাফ। এবার করোনা আক্রান্ত হলেন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অজয় রায়। একইসঙ্গে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন নার্সেস ইউনিটির সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ও। তিনি এসএসকেএমের অন্তর্গত অ্যানেক্স হাসপাতালে তিনি কর্তব্যরত। অর্থাৎ উদ্বেগের প্রহর যে শুরু হয়ে গিয়েছে, তা বলাই যায়।
কারণ, একে একে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিড পজিটিভ হতে শুরু করেছেন। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, যেভাবে পজিটিভিটি রেট বাড়ছে তাতে কিন্তু আইসোলেশনের যে নিয়ম ছিল, অর্থাৎ সাতদিনের আইসোলেশন বা ১৪ দিন ঘরে থাকা তা কতটা মানা সম্ভব হবে তা নিয়েও সন্দিহান স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।
এ ক্ষেত্রে মনে করা হচ্ছে আমেরিকার মতো পাঁচদিনের আইসোলেশন পর্ব কাটিয়ে ফের হয়তো কাজে যোগ দেওয়ানো হতে পারে। অবশ্যই তার আগে কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ হল কি না তা যাচাই করতে হবে। বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী যদি কোভিড পজিটিভ হন, তাহলে কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার একটা আশঙ্কা থেকে যায়। তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে স্বাস্থ্য ভবন।
বৃহস্পতিবারই ১৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে। শুক্রবার সেই সংখ্যার সঙ্গে যুক্ত হয় আরও ৮। মোট ২১ জনের মধ্যে চিকিৎসক থেকে নার্সিং স্টাফ, রয়েছেন সকলেই। শুক্রবার যে আটজন করোনা আক্রান্ত হন তাঁদের মধ্যে ৬ জন চিকিৎসক রয়েছেন, একজন নার্সিং স্টাফ রয়েছেন। অষ্টম জন লেডিস হস্টেল সুপারের ১৪ বছরের মেয়ে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার যে ১৩ জন আক্রান্ত হন, তাঁরা প্রত্যেকেই চিকিৎসক। শুক্রবার আরও ৬ জন সংক্রমিত হন। অর্থাৎ এখনও অবধি সেখানে ১৯ জন চিকিৎসক সংক্রমিত হয়েছেন। এর ফলে একটা উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে। এমনকী আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের সঙ্গে যুক্ত পশ্চিমবঙ্গ ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি রাজু বিশ্বাসও কোভিড পজিটিভ। তবে কি রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেল, তা নিয়েও কিন্তু একটা উদ্বেগ রয়েছে।
এরই মধ্যে আবার চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, এসএসকেএমের অন্তর্গত অ্যানেক্স হাসপাতালের নার্সও কোভিড পজিটিভ হলেন। স্বাস্থ্য দফতরের বিশ্লেষণে একাধিক বিস্ফোরক তথ্যও সামনে আসছে। তৃতীয় ঢেউ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যে আছড়ে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য স্বাস্থ্যভবনের কর্তাদের বিশ্লেষণ, প্রত্যেকদিন দ্বিগুণ হারে বাড়ছে সংক্রমণ। সংক্রমণের গ্রাফচিত্র ক্রমেই উর্ধ্বমুখী।
অন্যদিকে রাজ্য রোজই বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রের শনিবারের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে আরও একজন ওমিক্রন পজিটিভ হয়েছেন। অর্থাৎ এখনও অবধি বাংলায় ১৭ জনের শরীরে ওমিক্রনের হদিশ মিলেছে। এরমধ্যে তিনজন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। অ্যাক্টিভ ওমিক্রন কেস ১৪।