কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডে ডিএনএ রিপোর্টে মোড় ঘোরানো তথ্য। টিভি নাইনের হয়ে ডিএনএ রিপোর্ট বিশ্লেষণ করলেন বিজ্ঞানী-ডিএনএ বিশেষজ্ঞ পার্থপ্রতিম মজুমদার। তাতেই উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রহস্যের জট খুলতে করা হয়েছে ২৯টি ডিএনএ নমুনার বিশ্লেষণ। অপরাধস্থল থেকে পাওয়া ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে রিপোর্ট দিয়েছে সিএফএসএল। সেই রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ বিশেষজ্ঞের। ২৯টি নমুনার মধ্যে দু’টিকে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়েছে। নিহত চিকিৎসক, অভিযুক্ত সিভিকের রক্তের নমুনাকে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ধরা হচ্ছে। দুই গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড নমুনার ভিত্তিতে বাকি ২৭টি নমুনার বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ, সহজ কথায় অভিযুক্ত ও মৃতা ছাড়াও ক্রাইম সিনে কেউ ছিলেন কিনা, ঘটনায় যুক্ত ছিলেন কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে।
২৭টি নমুনার মধ্যে তিনটি নমুনা পরীক্ষার ইঙ্গিতেই মোড় ঘোরানো তথ্য। “বৃহদন্ত্রের শেষ ভাগ, স্তনবৃন্ত, যোনিদ্বারের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার ইঙ্গিত গোলমেলে”, পর্যবেক্ষণ ডিএনএ বিশেষজ্ঞ পার্থপ্রতিম মজুমদারের। সাফ বলছেন ‘বৃহদন্ত্রে যে সমস্ত ডিএনএ নমুনা একজন মহিলার, “তবে নমুনার কয়েকটি মার্কারের ইঙ্গিত, সেটি তিলোত্তমা বা ধৃত সিভিকের নয়”। এখানেই তাঁর প্রশ্ন, “ওই অন্য মহিলা কে? তিনি কোত্থেকে এলেন! ডিএনএ রিপোর্ট থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট নয়।”
তবে একইসঙ্গে তিনি এও জানাচ্ছেন “স্তনবৃন্তের নমুনা ধৃত সিভিকের ডিএনএ’র সঙ্গে মিলে গিয়েছে। তবে চারটি AUTOSOMAL MARKER বলছে, অন্য পুরুষেরও ডিএনএ রয়েছে। Y ক্রোমোজোম বিশ্লেষণে অবশ্য ধৃত সিভিক সঙ্গে পুরোপুরি মিলে গিয়েছে। তবে যোনিদ্বারের নমুনাতেও অন্য মহিলার উপস্থিতি মিলছে। D12S391 মার্কারে অন্য মহিলার সঙ্গে তিলোত্তমার নমুনার মিশ্রণ স্পষ্ট। এই অন্য মহিলার জেনোটাইপ হল ১৬/২২। এছড়াও D10S1248, D2S441, D16S539, D5S818 মার্কারে চার পুরুষের ডিএনএ মিলেছে।”
পার্থপ্রতিমবাবুর সাফ কথা, “বহুস্তরে নমুনাগুলির CONTAMINATION হয়েছে। একাধিক লোকেদের সঙ্গে ডিএনএ মিশ্রণ হয়েছে। এই একাধিক ব্যক্তির সকলেই পুরুষ নন। নিহত চিকিৎসক ছাড়া অন্য মহিলার ডিএনএ-ও রয়েছে। ক্রাইম সিনে অন্য মহিলার উপস্থিতির ইঙ্গিত রয়েছে।” কিন্তু, ক্রাইম সিন ছাড়া অন্যত্র মিশ্রণ সম্ভব? ডিএনএ বিশেষজ্ঞের দাবি, দাবি, “এই CONTAMINATION ল্যাবে হওয়া কার্যত অসম্ভব। এই কন্টামিনেশন ছত্রাক বা ব্যাক্টিরিয়া থেকেও নয়। সিএফএসএল প্রচুর সতর্কতা অবলম্বনে এই কাজ করে।” তবে রাজ্যের ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে নমুনা তো সিএফএসএলে হস্তান্তর হয়েছে? তবে কি সেখানেই গণ্ডগোলের সম্ভাবনা? প্রশ্ন উঠছে।