AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Clinical establishment amendment bill: বেসরকারি হাসপাতালের আকাশচুম্বী বিল আটকাতে পাশ হল বিধানসভায় বিল

Clinical establishment amendment bill: ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট সংশোধনী বিল নিয়ে শুভেন্দু বলেন, "আরজি করের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মহিলা চিকিৎসক , নার্স এবং মহিলা রোগী ও নিরাপত্তারক্ষীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয় এই সংশোধনীতে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। কিন্তু এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়ে অবশ্যই সরকারের ভাবনাচিন্তা করা উচিত।"

Clinical establishment amendment bill: বেসরকারি হাসপাতালের আকাশচুম্বী বিল আটকাতে পাশ হল বিধানসভায় বিল
বিধানসভায় পাশ হল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট সংশোধনী বিলImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 17, 2025 | 7:08 PM

কলকাতা: ধোপে টিকল না বিজেপি বিধায়কদের বিরোধিতা। এমনকি, বিজেপি-র প্রস্তাবিত সংশোধনীও যোগ হল না। ২ দিনের আলোচনা শেষে বিধানসভায় পাশ হল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট সংশোধনী বিল। বেসরকারি হাসপাতালের ‘অতিরিক্ত’ বিলে লাগাম টানতে কেন এই সংশোধনী বিল দরকার, এদিন বিধানসভায় তুলে ধরেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। অন্যদিকে, এই সংশোধনী বিল নিয়ে শাসকদল তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

সোমবার বিধানসভায় ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যামেন্টমেন্ট বিলটি পেশ করেছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। গতকাল বিলটি নিয়ে দেড় ঘণ্টা আলোচনা হয়। তবে গতকালের আলোচনায় বিজেপির কোনও বিধায়ক অংশ নেননি। এদিনও বিলটি নিয়ে ঘণ্টাদেড়েক আলোচনা হয়। এদিনের আলোচনায় বিজেপির তরফে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও একাধিক বিধায়ক অংশ নেন।

ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট সংশোধনী বিল নিয়ে শুভেন্দু বলেন, “আরজি করের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মহিলা চিকিৎসক , নার্স এবং মহিলা রোগী ও নিরাপত্তারক্ষীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয় এই সংশোধনীতে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। কিন্তু এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়ে অবশ্যই সরকারের ভাবনাচিন্তা করা উচিত।”

এই সংশোধনী বিলে বলা হয়েছে, রোগীকে ভর্তির সময় যে প্যাকেজের কথা বলা হবে, তার চেয়ে বেশি বিল হলে আগে থেকে তার কারণ রোগীর পরিবারকে জানাতে হবে। এই নিয়ে শুভেন্দু বলেন, “এই সংশোধনীতে প্যাকেজের কথা বলা হয়েছে। যাতে প্রাইভেট হাসপাতাল রোগীদের থেকে বেশি পয়সা আদায় করতে না পারে। এর সঙ্গে আমি একমত। আমি মনে করি, ৯০/৯৫ শতাংশ পেশেন্ট এই প্যাকেজ পূরণ করতে পারবে। কিন্তু ২/৫ শতাংশ তো থেকেই যাবে, যারা এই প্যাকেজ দিতে পারবে না। এক্ষেত্রে তার দায় এবং দায়িত্ব কে নেবে তা স্পষ্ট করা উচিত।” তাঁর আরও বক্তব্য, “হাসপাতালগুলো যে প্যাকেজ ঠিক করবে, তা বিস্তারিতভাবে সরকারি পোর্টালে তুলে ধরা উচিত। অর্থাৎ কোন চিকিৎসার জন্য কত টাকা লাগবে, সেই তথ্য পেশেন্টের হাতে থাকলে হাসপাতাল তাদের প্রতারিত করতে পারবে না।”

বিরোধী দলনেতা আরও বলেন, “এই বিষয়টির সঙ্গে প্রচুর মানুষ জড়িত। বহু বেসরকারি হাসপাতাল, ওপিডি, ডে কেয়ার ইউনিট জড়িত। তাই আমার মনে হয়, আরও একটু সময় নিয়ে আলোচনা করে আইন সংশোধনী করা উচিত ছিল। স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে বিলটি পাঠানো উচিত ছিল। স্টেক হোল্ডারদের সকলের বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে শুনে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।”

সংশোধনী বিল নিয়ে শুভেন্দু বলেন, “এই সংশোধনী বিলে আপনারা বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রিটমেন্টের বাজেট হাসপাতালকে দিতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, একজন রোগীর চিকিৎসা রিপোর্ট আসতে তার বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গোটা বাজেট জানিয়ে দেওয়া কিন্তু কঠিন কাজ। হাসপাতাল করতে পারবে না। আপনাদের ভাবা উচিত।” তাঁর প্রশ্ন, ই-প্রেসক্রিপশনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এর ফলে পেশেন্টের গোপনীয়তা রক্ষা হবে তো?

তৃণমূলকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, “এই আইন পাশ করার পরে হাসপাতালগুলো থেকে আরও বেশি টাকা তুলবে তৃণমূল। আর হাসপাতালে স্টাফ হিসেবে নিজেদের ছেলেদের ঢোকাবে।” বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ‘লাটে’ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এমনিতেই এখন অধিকাংশ রোগী বাইরে চলে যাচ্ছে চিকিৎসার জন্য। এই বিল চূড়ান্ত হলে এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে।” সরকার তড়িঘড়ি সংশোধনী আনতে চাইছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তৃণমূলের তরফে সংশোধনী বিল নিয়ে এদিন বিতর্কে বিধায়ক নির্মল মাজি বলেন, “কিছু রাজনৈতিক নেতার মদতে নানা জায়গায় নার্সিংহোম গজিয়ে উঠছে। অনেক সময়ই খবর পাওয়া যায়, যেখানে একটি সিটি স্ক্যান দরকার, সেখানে ৩ বার করা হচ্ছে। ভেন্টিলেটরে মৃতদেহ রেখে দেওয়া হয়। অ্যাঞ্জিওপ্লাসটি দরকার নেই, তাও করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক দরকার না হলেও দেওয়া হয়। পরে সেগুলোই ফার্মেসিতে ফিরে আসে।”

এই সংশোধনী বিল কেন দরকার, এদিন বিধানসভায় তুলে ধরেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “বিলে নানারকম উল্লেখ থাকে। বিল বাড়তেই পারে। কিন্তু রোগীকে জানাতে হবে, তার ঠিক ঠিক কীসের জন্য কী খরচ হল। লুকিয়ে কিছু করা যাবে না। দু’দিন বেশি থাকতে হলে হবে। খরচের ব্রেক আপ দিতে হবে। কোন অসুখে কী চিকিৎসা, তার কত খরচ, সেটা জানাতেই হবে।” বিলে ১৬টি সংশোধনী আছে বলে তিনি জানান। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ৫টা ইঞ্জেকশন দিয়ে ২০টার দাম নেবে। এটা চলবে না। বেসরকারি হাসপাতালে মহিলা রোগী ও কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দেখতে হবে বলে তিনি পরে জানান। তাঁর বক্তব্য, এই নিয়ে সরকার গাইডলাইন তৈরি করে দিতে পারে না।

বিলটিতে আরও সংশোধনী দরকার বলে দাবি করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। একাধিক সংশোধনীর প্রস্তাবও করেন তিনি। কিন্তু, তাঁর সবকটি সংশোধনী প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। শেষপর্যন্ত এদিন বিধানসভায় বিলটি পাশ হয়। এখন বিলটিতে অনুমোদনের জন্য রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে পাঠানো হবে। তিনি বিলে অনুমোদন দিলেই সংশোধনীগুলি আইনগতভাবে কার্যকর হবে।

পূর্ব ভারতের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, “বেসরকারি হাসপাতালের বিলের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এটা ভাল উদ্যোগ। প্যাকেজের কথা যেটা বলা হয়েছে, সেটা একদিক দিয়ে ভাল। কিন্তু, চিকিৎসার সময় এটা অনেক ক্ষেত্রে করা যায় না। ফলে প্যাকেজের বাইরে বিল হলে পর্যালোচনার ক্ষেত্রে একটু ভাল করে দেখতে হবে।”