কলকাতা: প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে কোনও ধরনের ছেলেখেলা বরদাস্ত করবে না রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার কড়া বার্তা দিয়ে রাজ্যে নতুন ‘স্যান্ড মাইনিং পলিসি’র কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অনেক দিন ধরেই অভিযোগ আসছে। কিন্তু চেষ্টা করেও কিছু স্থানীয় মাফিয়াদের জন্য আমরা কিছু করতে পারছিলাম না।” সেই মাফিয়াদের ‘শায়েস্তা’ করতেই এই নতুন ‘স্যান্ড মাইনিং পলিসি’ আনা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
নতুন পলিসি অনুযায়ী, বালি-সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক জিনিসের নিলাম করার যে দায়িত্ব আগে জেলাশাসকের উপর ছিল, সেই দায়িত্ব সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে মিনারেল মাইনিং বোর্ডের হাতে। গোটা বিষয়টির তদারকির ভার থাকবে মুখ্যসচিব এবং অর্থ দফতরে সচিবের উপর। নতুন নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, “সবাইকে মনে রাখতে হবে, স্থানীয় সম্পদ লুঠ করা যাবে না। বালি প্রাকৃতিক সম্পদ, রাজ্যের সম্পদ। মাটি-সুরকি এগুলো রাজ্যের সম্পদ। এগুলোকে লুঠ করা যাবে না। পুরো বিষয়টাই আমরা অনলাইনে করব, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, “আমরা শক্ত হাতে পুরো ব্যাপারটাকে ধরার চেষ্টা করছি। সাধারণ মানুষের জন্যও ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হবে। যদি দেখেন আপনার এলাকায় কেউ করে খাচ্ছে, সোজা আপনি নালিশ জানাতে পারেন। নালিশ জানালে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ক্ষেত্রে কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না, সে যেই হোক না কেন। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একই পদক্ষেপ করা হবে।”
কিন্তু এতদিন ধরে কীভাবে বালি মাফিয়াদের রমরমা চলল? সেই ব্যাখাও এ দিন করেছেন মমতা। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “এতদিন এই প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর নিলাম জেলাশাসক স্থানীয়ভাবে করত। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি কাউকে পাঁচ বছরের জন্য দেওয়া হত, তবে যতটা নেওয়ার কথা, তার চার গুণ নিয়ে পালিয়ে যেত। যাতে পুরো রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদ ও জলবায়ু নষ্ট হয়, এবং সরকারের আয়ও কমে যায়।” সেই অনিয়ম রুখতে নতুন ‘স্যান্ড মাইনিং পলিসি’ কার্যকর হবে বলেই আজ আশাপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আরও পড়ুন: ‘ফোন রেখে কী লাভ! হয় ডিপফ্রিজে ঢুকিয়ে দাও, ঠাণ্ডায় ঘুমিয়ে যাবে, নয়তো শ্রাদ্ধ করে দাও’