কলকাতা: কয়েকদিন আগেই ভাইরাল হয়েছিল একটি ভিডিয়ো। সেখানেই দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিতে গিয়ে দলেরই কয়েক জনের নাম করতে দেখা যায় রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী তথা শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোকে (Srikanto Mahato)। তাঁদেরকে ‘খারাপ’ লোক বলে সম্বোধনও করেন তিনি। যা নিয়েই অস্বস্তি বেড়েছিল শাসক তৃণমূলের (Trinamool Congress)। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি টিভি-৯ বাংলা (TV-9 Bangla)। এদিকে ওই ঘটনার পরেই শোকজ করা হয়েছিল শ্রীকান্তকে। বিতর্কিত মন্তব্যের পরপরই কমতে দেখতে দেখা গিয়েছিল তাঁর নিরাপত্তা। এবার এই শ্রীকান্তকে জুন মালিয়ার কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)।
সূত্রের খবর, এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিজে থেকেই শ্রীকান্তর প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। সেখানেই জুনের কাছে শ্রীকান্তকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন মমতা। এমনকী ভিডিয়োতে যাঁদের নাম বলেছিলেন তাঁদের সকলের কাছেই ক্ষমা চাইতে বলেছেন বলে খবর। সূত্রের খবর, “এদিন মমতা বলেন, জুন আপনার থেকে ছোট। এমনভাবে ক্ষমা চান যাতে জুন আমায় বলে”। প্রসঙ্গত, শালবনীতে দলীয় কর্মীদের ডাকা বৈঠকে কয়েকদিন আগে যোগ দিয়েছিলেন শ্রীকান্ত। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলের একাধিক প্রথমসারির মুখদের বিরুদ্ধে জোরালো সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল শ্রীকান্তকে।
ভাইরাল ভিডিয়োতে শ্রীকান্তকে বলতে শোনা যায়, “আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছি, সুব্রত বক্সিকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাঁরা বুঝতে চাননি। খারাপ লোককেই তাঁরা ভাল লোক বুঝেছেন। আমরা বাঁচব কীভাবে? ওঁরা খারাপ লোককে খারাপ বলবে তো! এখানে যদি দেবাদিদেব মহাদেব, সন্ধ্যা রায়, সায়ন্তিকা, জুন মালিয়া, মিমি-ঝিমি, নুসরত-ফুসরত, সন্দীপ সিং, উত্তরা সিং.. তারা যদি লুঠেপুটে খাচ্ছে, তারা যদি সম্পদ হয়, তাহলে তো সে পার্টি করা যাবে না। পার্টির টাকা ডাকাতি করে তারা যদি পার্টির সম্পদ হয়, তাহলে কি চোর ডাকাতদের কথা শুনবে দল? আমাদের সামাজিক আন্দোলন করতে হবে। মুখে বলতে হবে।”
ঘটনা প্রসঙ্গে জুন মালিয়া বলেন, “ক্ষমা চাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। দল থেকে যে ওকে এভাবে শোকজ করা হয়েছে, যে কথা গুলো ও বলেছে সেখানে ওকে ক্ষমতা চাইতে বলা হয়েছে সেটা ঠিক আছে। আমরা খুশি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেছেন ক্ষমতা চাইতে সেটাই যথেষ্ট। তবে আপাতত উনি ফোন করেননি।”
তবে এর আগে দলের শোকজের উত্তর দিয়েছিলেন শ্রীকান্ত। জবাবে কী লিখেছিলেন তিনি? এ বিষয়ে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেছিলেন, “শ্রীকান্ত বাবু লিখেছেন, তিনি অসতর্ক মুহূর্তে, আবেগতাড়িত হয়ে এই কথা বলে ফেলেছেন। এই কথা তাঁর মনের কথা নয়। নিজেকে দীর্ঘদিনের দলের অনুগত সৈনিক বলেও জানিয়েছেন এবং তাঁর ওই মন্তব্যের জন্য যদি কেউ দুঃখ পেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি তার জন্য দলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।”