কলকাতা: দলের রাশ কী আলগা হচ্ছে নাকি নির্বাচন এলেই আত্মশুদ্ধি বোধ জাগে শাসকদলের? একের পর এক নেতার মন্তব্যে প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক মহলের অলিতেগলিতে। নির্বাচনের আগে কেউ দলের নির্বাচন কমিটিতে জায়গা না পেয়ে মুখ খুলছেন, কেউ আবার টিকিট না পেয়ে অভিমানী হয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বর্ষণ করে নিজের কষ্টের কথা শোনাচ্ছেন। তবে এই তালিকায় নতুন সংযোজন তৃণমূল কাউন্সিলরের বিস্ফোরক মন্তব্য।
নিজে কাউন্সিলর হয়ে অন্য কাউন্সিলরদের বর্তমান বিলাসবহুল জীবনযাপনকে তুলোধনা। রীতিমতো কটাক্ষের সুর কালীঘাট এলাকার ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের গলায়। রাসবিহারী বিধানসভার কর্মীসভায় রীতিমতো বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁকে। যা নিয়ে চলছে চর্চা। ‘মুখ্যমন্ত্রী না থাকলে দলের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না’, কাউন্সিলরের এই বক্তব্যে রীতিমতো অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ার এই কাউন্সিলরের নির্বাচনের মুখে এই মন্তব্য দলকে বিড়ম্বনায় ফেলবে না তো? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
দলের নবীন প্রজন্ম যে একেবারেই ভোটারদের প্রতি বিমুখ সেটাও নিজের বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে বুঝিয়ে দিয়েছেন ওই কাউন্সিলর। বলেন, পতাকার তলায় আছেন বলে আপনাকে চেনে, কাল পতাকাটা কেড়ে নিলে পাড়ার কুকুরও আপনাকে চিনবে না। মাথার উপরে মুখ্যমন্ত্রী। তার ভোট কমবে কি কারণে? কারণ হচ্ছে আমাদের কিছু নেতার ব্যবহার, আমাদের চলাফেরা। আমাদের হঠাৎ যেন গজিয়ে ওঠা। বড় বড় গাড়ি চড়লাম! বড় বড় সোনার চেন! একটু নিজেদেরকে সংযত করুন।
যখন তিনি এই সব কথা বলছেন তখন সুব্রত বক্সি থেকে ফিরহাদ হাকিম প্রত্যেকে উপস্থিত সেখানে। সেখানেই ওই প্রবীণ কাউন্সিলর দলেরই অন্য কাউন্সিলরদের যেভাবে পরোক্ষে আয়নায় মুখ দেখতে বললেন তা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়ছে রাজনীতির পাড়ায়। এ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই দলের ভাবমূর্তি নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবেই, এমনই মনে করছেন দলের শীর্ষনেতারা।
অন্যদিকে ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, রাসবিহারীর কর্মীসভা থেকে আমরা মূলত কর্মীদের একাধিক নির্দেশ দিয়েছি। কে কী বলেছে আমার জানার দরকার নেই। কী করে যেসব মানুষগুলি ভোট বিমুখ হয়েছে তাদেরকে বুথ পর্যন্ত নিয়ে আসা যায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কর্মীদের পর্যাপ্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভোটের ব্যাপারে। আমাদের লক্ষ্য গতবারের থেকে মার্জিন বাড়ানো।