কলকাতা : রাজ্যে বাড়ছে ওমিক্রনের আতঙ্ক। বিদেশ ফেরত আরও এক ব্যক্তির শরীরে মিলল করোনার সংক্রমণ। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ। বৃদ্ধের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দত্তপুকুরে। তাঁর সাম্প্রতিক ট্রাভেল হিস্ট্রি থেকে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগেই বাংলাদেশ থেকে ফিরেছেন তিনি। বর্তমানে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে তাঁকে। তাঁর সোয়াবের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য পাঠানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধ সম্প্রতি বাংলাদেশে তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পরেই তাঁর শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। তবে তিনি করোনার কোন স্ট্রেনে আক্রান্ত তা নিয়ে এখনও চূড়ান্তভাবে কিছু জানা যায়নি। ওমিক্রনে আক্রান্ত সন্দেহে তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। জানা গিয়েছে, তাঁর সোয়াবের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য কল্যাণীতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ওই বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ব্রিটেন থেকে দোহা হয়ে কলকাতা এসে পৌঁছান এক ব্রিটিশ তরুণী। আলিপুরে তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তিনি। কলকাতাগামী কাতার এয়ারওয়েজ়ের যে বিমান রাত ২টো ৩০ নাগাদ কলকাতায় পৌঁছায় সে বিমানেরই যাত্রী ছিলেন ওই তরুণী। বিমানবন্দরে অবতরণের পর বাকি যাত্রীদের সঙ্গে তাঁরও করোনা পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায় রিপোর্ট পজিটিভ। এরপর শুক্রবার সকালেই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে।
গোটা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্য়ারিয়েন্ট ওমিক্রন। প্রাথমিক তথ্যে জানা গিয়েছে, যারা আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের যেমন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনই আবার টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে স্বস্তি একটাই, ওমিক্রনে সংক্রামিত হলে বাকি ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় কম অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি, বুধবার এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
উল্লেখ্য, এই ভ্যারিয়েন্ট অনেক দ্রুততার সঙ্গে ছড়ায় তা যেমন ঠিক, একই সঙ্গে এটাও ঠিক এখনও অবধি ওমিক্রনে প্রাণহানি কিংবা অন্যান্য ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে এমন নজিরও দেখা যায়নি। তাই সতর্ক থেকেই আপাতত এই ভ্যারিয়েন্টকে মোকাবিলা করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
ভাইরোলজিস্ট সুমন পোদ্দার বলেন, “ওমিক্রন আজকে হোক বা কালকে হোক আমাদের রাজ্যে আসবেই। দেশে ঢুকে গিয়েছে। বাংলায় বা কলকাতায় প্রবেশটা সময়ের অপেক্ষা। তাই এটার জন্য এখনই বেশি মাথাব্যাথার কোনও প্রয়োজন নেই। সারা পৃথিবীতে যে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে তাতে ওমিক্রনের প্রভাব এখনও পর্যন্ত মাইল্ড। খুব যে জীবনহানি হল বা শরীরে খুব জটিলতা তৈরি হচ্ছে এরকম নয়। তাই এখনও বিপদ তুলনামূলক কম বলাই যায়। ওমিক্রনে এখনই বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। তবে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। নতুনভাবে নতুন মিউটেশন যখন আসে আমরা একটু সতর্ক হতে পারি, এটুকুই। বাকিটা সময়ের হাতেই ছাড়তে হবে। তবে আবারও বলব, মাত্রাছাড়া চিন্তার কোনও কারণ এখনও নেই। আগের মতো গেল গেল যে পরিস্থিতি হবে, এখন এমনও নয়। এটা ঠিক, ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রমক। অনেক বেশি লোক সংক্রমিত হবেন। তবে সে অনুপাতে ভয়াবহতা অনেক কম হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।”